ফেসবুক ট্যাগ কখন করবেন এবং কেন করবেন?

অনেকেই আছেন যারা অনেক দিন ধরেই ফেসবুক ব্যবহার করেই যাচ্ছেন। ফেসবুক মেসেঞ্জারে বন্ধুদের বিকাল-সন্ধ্যা, রাতদুপুরে মেসেজ দিয়েই যাচ্ছেন, দিয়েই যাচ্ছেন। কিন্তু বন্ধু তালিকায় থাকা বন্ধুদের পোস্টে ভুলেও লাইক/কমেন্ট করছেন না। এমনকি মাসে একবারও চুপি দিয়ে দেখছেন না, বন্ধুটি কি পোস্ট করেছে। লাইক/কমেন্ট তো দূরেরই কথা!

আবার নিজের একটা ভালোলাগা ভিডিও মেসেঞ্জারে প্রেরণ করছেন। ভাবছেন না যে, আমি যেটা পছন্দ করছি বা আমার যেটা পছন্দ, সেটা আমি যাকে প্রেরণ করছি, তার কাছে ভালো লাগবে কিনা? ধরে নিতে পারেন, তার কাছে সেটা ভালো না-ও লাগতে পারে। সেটা না ভেবেই নিজের ইচ্ছেমতো বলা নেই কওয়া নেই, সময় নেই গময় নেই; দিনরাত মেসেঞ্জারে বিরক্ত করেই যাচ্ছেন। এতে নিজের কাছে ভালো লাগলেও, তা অন্যের কাছে হতে পারে বড়ই বিরক্তির বা অশান্তির মহৌষধ! তবে হ্যাঁ, মেসেজ বা বার্তা প্রেরণ করবেন। কখন এবং কেন করেন? যখন আপনার বিশেষ প্রয়োজন হবে, তখন মেসেজ বা বার্তা প্রেরণ করতে পারেন। নিজের আত্মীয় স্বজনদের ছবি নিজের আত্মীয় স্বজনদের কাছে পাঠাতে পারেন। জরুরি কোন সংবাদ প্রাপকের ইচ্ছায় প্রেরণ করতে পারেন। এছাড়া তো কোন অবস্থাতেই কারোর মেসেঞ্জারে কোনোকিছুই পাঠাতে পারেন না। এটা একরকম বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়!

এবার আসি ট্যাগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায়। আমরা যারা ফেসবুক ব্যবহার করছি। সকলেই লক্ষ্য করছি যে, কেউ কেউ দিন 🐀 রাত সুযোগ পেলেই একসাথে ৫০ জন বন্ধুকে ট্যাগ করে যাচ্ছেন। কিন্তু কেন? ট্যাগ করার প্রয়োজন-ই-বা কি? আপনি যখন ফেসবুকে একটা পোস্ট করবেন, তখন অটোম্যাটিকলি আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা সকল বন্ধুরা এমনিতেই দেখতে পাবে। তাহলে এরপরও আবাত ট্যাগ করার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। এটা একরকম গায়ে পড়ে ঝগড়া করার সামিল!

আসলে যারা হরদম ট্যাগ করে যাচ্ছেন, মনে হয় তারা আজও জানেন না যে, ফেসবুক ট্যাগ কি এবং কেন? বিশ্বাস করুন, এটি ঠিকমত ব্যবহার না করা হলে সত্যিই খুব বিরক্ত লাগে। যা যিনি যাকে তাকে দিন 🐀 রাত ট্যাগ করে যাচ্ছেন, তাকে যদি কেউ ট্যাগ করে; তার কাছেও বিরক্তিকর হতে পারে। কেন হতে পরে?

তাহলে আসুন জেনে নেই ফেসবুক ট্যাগ কী এবং কেন?

ট্যাগ এর ইংরেজি (Tag) বাংলা অর্থ হলো, শিকল বা শিকল দ্বারা আটকানো বা মোটা একটা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা।

তাহলে বুঝতেই পারছেন যে, আপনার কোন পোষ্ট বা ছবিতে যদি আপনি অন্য কোন ফ্রেন্ডকে আটকাতে চান, তাহলে শুধুমাত্র ট্যাগ ব্যবহার করেই আটকাতে পারবেন। তার মানে হলো, আপনি নিজে অন্যায় করে অপরকে ফাঁসানো।

কিন্তু কেন? কেন অযথা নিজের দোষ অপরের ঘাড়ে চাপাবেন? যদি ট্যাগ সম্পর্কে বুঝে থাকেন, তাহলে শুধু শুধু আপনার একটি পোষ্টে অনেক ফ্রেন্ডদের ট্যাগ করবেন না। এর কোনও মানেই হয় না।

এবার জেনে নিন ট্যাগ করলে কি হয়! ট্যাগ করলে আসলে কি হয়?

ধরুন আপনি একটি ছবি আপলোড করে আপনার কোন বন্ধুকে ট্যাগ করলেন। সাথে সাথে আপনার আপলোড করা ছবিটি আপনার ট্যাগ করা বন্ধুর ওয়ালে বা টাইমলাইনে চলে যাবে। এর অর্থ দাঁড়ায় আপনার পোষ্টের সাথে তারাও জড়িত। তাই আপনি তাদেরকে ট্যাগ করেছেন। যা আইনের চোখে জঘন্য অপরাধ। কাজেই নিজের ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে ট্যাগ করবেন না।

হ্যাঁ, ট্যাগ করবেন। কখন করবেন, কী করবেন এবং কাকে করবেন? ট্যাগ করবেন, এলাকার কোনও জরুরি সংবাদ! আচমকা কোনও দুর্ঘটনাজনিত কারোর মৃত্যুর খবর ট্যাগ করতে পারেন। এছাড়াও নিজের পারিবারিক কারোর ছবি আপনার কোনও আত্মীয়স্বজনকে ট্যাগ করতে পারবেন। এই অবস্থায় আপনি আপনার ঘনিষ্ঠ পরিচিত বন্ধুদের অনুমতিতে ট্যাগ করতে পারেন। এছাড়া অন্য কাউকে নয়। আর এটাই হচ্ছে ফেসবুক ট্যাগের প্রকৃত অর্থ বা নিয়ম।

কিন্তু অনেকেই দেখি অবুঝের মতো নিজের একটা ছবি দিয়ে, ৩০ থেকে ৫০ জনকে ট্যাগ করে দেয়। যা আসলেই ফেসবুকের নীতি বিরোধী ও একপ্রকার স্পাম। তাই কখনোই এই কাজটি আর করবেন না, প্লিজ! আরও জানুন, ফেসবুকে ট্যাগ দ্বারা কাউকে বিরক্ত করা মানে নিজে ব্লক লিস্টে বা আনফ্রেন্ড তালিকায় নাম লেখানো। যদি ভুল বলে থাকি, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে ক্ষমা করে দিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো অন্যসব বন্ধুদের দিনে রাতে ২৪ ঘণ্টা অযথা মেসেজ আর বিরক্তিকর ট্যাগ করতে থাকুন। এরজন্য ভবিষ্যতে ফেসবুক থেকে পুরস্কারও পেতে পারেন। ধন্যবাদ।

ছবি গুগল থেকে।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৬ টি মন্তব্য (লেখকের ৩টি) | ৩ জন মন্তব্যকারী

  1. ফয়জুল মহী : ১৯-০৮-২০২০ | ৩:৩২ |

    আমার এক বন্ধুর দুই মেয়ে তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একটা এতিম ছেলে লালনপালন করবেন। উনি এর জন্য ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে ছিলেন । কি আজব চিন্তা। 

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ১৯-০৮-২০২০ | ২২:৩৪ |

      এটা একরকম আজব চিন্তাই বটে! তবে এ-ও বলতে হয় যে, যারযার বুঝ যেরকম, তো সে রকমই হবে। 

      শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় দাদা।     

      GD Star Rating
      loading...
  2. মুরুব্বী : ১৯-০৮-২০২০ | ৭:২৮ |

    আপনি সঠিক আলোচনা করেছেন মি. নিতাই বাবু। এই একটি কাহিনী ফেসবুকের প্রতি আমাকে দিন দিন অনাসক্ত করে তুলেছে। ট্যাগ এর পাশাপাশিও আছে গণহারে ইনবক্সে ভিডিও লিংক ফরোয়ার্ড করা। যে বিষয়গুলোন একদম জানা বা দেখা সেগুলো দেখা গেলো ঠিক মধ্য রাতে অনাহুত ভাবে এসে হাজির।

    ___ তখন মনে হয়, হে সৃষ্টিকর্তা তুমি আমাকে মাফ করো। Smile

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ১৯-০৮-২০২০ | ২২:৩৭ |

      একেক সময় খুব জেদ জয়! পারি না রাখতে, পারি না সইতে, এরকম অবস্থা হয়! অনেক সময় অনেককে আলফ্রেড করে ফেলি। আবার ব্লক লিস্টেও ফেলে রাখি! 

      সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় দাদা।               

      GD Star Rating
      loading...
  3. আলমগীর সরকার লিটন : ১৯-০৮-২০২০ | ৯:২০ |

    আসলে ফেসবুক না থাকলে এতকিছু হত না কবি নিতাই দা

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ১৯-০৮-২০২০ | ২২:৩৭ |

      ভালো থাকবেন আশা করি। শুভেচ্ছা -সহ শুভকামনা থাকলো।         

      GD Star Rating
      loading...