মানসিক অবক্ষয় থেকেই আমাদের এই সমাজে সামাজিক অবক্ষয় শুরু। যে অবক্ষয় মানুষকে সমাজের একদম নিম্নস্তরে পৌঁছে দেয়। যে মানুষ তার নিজের আত্মসম্মান ও তার অবস্থান সম্পর্কে চিন্তিত না সেই মানুষটার কাছে সমাজও পরিবারের বিধিনিষেধ তখন সবচেয়ে খারাপ ও অসহ্য উক্তি বলে মনে হয়। কিন্তু সে মানুষটা নিজেও জানে ঠিক তার কর্মের প্রতিফল একদিন তাকে ভোগাবে এবং ভোগ করতে হবে। মানুষ যদি তার কর্মফল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না হয়, তাদের কাছে সমাজ ভালো কিছু আশা রাখেনা। আমাদের এই বিচ্ছুরিত পৃথিবীতে মানুষ যেই সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছে, যে জায়গাটা মানুষের জন্য নিয়ম তান্ত্রিক বিচরণ ক্ষেত্র অথবা সেই সমাজ ব্যবস্থা মানুষের জন্য একটা দলবদ্ধ জায়গা।
সেখানে বাস করে ধনী-গরিব মধ্যবিত্ত এমনকি সব শ্রেণীর মানুষ। কিন্তু সেই সমাজে যদি কুশিক্ষায় শিক্ষিত চরিত্রহীন লম্পট ও নষ্ট চরিত্রের অধিকারী মানুষের বসবাস হয় তবে সেই সমাজের মানুষ ওই অসামাজিক নোংরা নিকৃষ্ট কীটের কাছে কি আশা করতে পারে। মানুষ কোনদিন সমাজ ব্যতীত একা বাঁচতে পারে না। এই পৃথিবীতে পশুও পোকামাকড়ের মধ্যে “পিঁপড়া বানর” সুন্দর সমাজব্যবস্থা দেখা যায়, সেটি যদি প্রত্যেকটা মানুষ মনস্তাত্ত্বিকভাবে তাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে অনুসরণ করতো তাহলে অবশ্যই সে মানুষটা বুঝতে পারতো তার দায়িত্ব কি! তার দায়বদ্ধতা কি! তাকে কি করা উচিত বা তাকে কি না করা উচিত, যা কখনোই ইগনোর করতে পারত না।
আমরা মানুষ নিষিদ্ধ সবকিছুতেই আকর্ষিত হই, আমরা যদি একবার ভাবতাম এই নিষিদ্ধ কর্মটি কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে ও আমরা যদি জানতাম তার পরিণাম কি তাহলে পৃথিবীতে মানুষের পরিবর্তন ঘটতো। আমরা কি একবারও ভেবেছি কখনো, আমাদের আত্মসম্মান ছাড়া আর কি আছে, যার দ্বারা মানুষ তাকে স্মরণীয় করে রাখবে এবং নীতিগত ভাবে স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে থাকবে মানুষের হৃদয়ে?
মানুষ মরে গেলে আর কী থাকে তার জীবনে, মানুষ কি তার মৃত্যুর পরে কোন সম্পদ সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে! যদি নাইবা নিয়ে যেতে পারে তাহলে কিসের আশায় পথ ভ্রষ্ট হয়? মানুষ যদি তার চাহিদাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, মানুষ যদি তার নফসকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, মানুষ যদি তার চরিত্রকে সংবরণ করতে না পারে অথবা মানুষ যদি তার আত্মসম্মানবোধ, অথবা তার অস্তিত্বকে নিজের ইচ্ছায় ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে তাহলে সে মানুষকে সভ্য জগতের মানুষ কোনদিন ভালো দৃষ্টিতে দেখতে পারে না। সুনজরে ভালবাসতে পারেনা।
যাদের জন্য এই সমাজে কিছু মানুষ হেয় প্রতিপন্ন হয় তারা কি কখনো বিবেচনা করে দেখেছে সে মানুষের কি ক্ষতি হবে কাউকে ভিখারি বানিয়ে কাউকে সমাজের একদম নিম্নস্তরে মাথানত করিয়ে দিয়ে ভালো থাকা যেত তাহলে জগতে ভালো আর মন্দের পার্থক্য অনুধাবন করার প্রয়োজন ছিল না আমি জানি সব অস্তিত্ব চিরদিন টিকিয়ে থাকে না কিছু কিছু অস্তিত্ব আছে পৃথিবী সেই অস্তিত্বকে স্বীকার করে না কিছু কিছু অস্থিত্ব আছে যে অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য পৃথিবীর মানুষ এগিয়ে আসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে আমি সেই সমাজে বাস করি যে সমাজের মানুষ আমাকে ভালবাসে। সেজন্য আমি নিজেকে গর্বিত ভাবি একটা কথা বিভিন্ন লোকমুখে শোনা যায় একাডেমিক শিক্ষায় শুধু মানুষকে শিক্ষিত করে না পারিবারিক শিক্ষাটাও থাকতে হয় পারিবারিক মূল্যবোধ পারিবারিক গুরুত্ববোধ যদি কোন সভ্য মানুষের ভিতরে থাকে সে কখনো খারাপ পথে সঙ্গী হতে পারে না সে কখনো খারাপ মানুষের সাথে হতে পারেনা সে কখনো খারাপ সমাজের বাসিন্দা হতে পারে না। মানুষকে মনে রাখতে হবে জীবন অতি ছোট এখানে কর্মের দিক দিয়ে অনেক কিছুই করার আছে এখানেই সম্মান দেয়া নেয়া হয় এখানেই ভালো আর মন্দের পার্থক্য করানো হয় এখানেই সৎ অসৎ এর মূল্যবোধ বিবেচনা করা হয় এই সুন্দর পৃথিবীতে সম্ভব চেহারার সাথে যদি সুন্দর মন গঠন করা না যায় তাহলে তাকে মানুষ ভালো দৃষ্টিতে দেখে না এই সমাজের ৫ জন মানুষ যদি আপনাকে পাঁচটা ক্যারেক্টারে দেখে এই সমস্ত ক্ষমতা কে ঘৃণা করে একটা শরীর যদি বহুগামী হয় একটা মন যদি বহুগামী হয় দুইটা পা যদি পথের পথিক হয় তাহলে সে মানুষটার কি আত্মসম্মানবোধ থাকল কি গোপনীয়তা থাকল জানি এসে গর্ব করবে জানিয়ে সে অহংকার করবে যা নিয়ে সে মানুষের মুখোমুখি দাঁড়াবে। একজন স্বাধীন মানুষ হয়ে যদি স্বাধীনতার অপব্যবহার করে একজন স্বাধীন মানুষ হয়ে যদি সে মানুষ স্বাধীনতার খেলাপে যায় তাহলে পাড়ার স্বাধীনতা নামের কোন শব্দটি অবশিষ্ট থাকল যাহা নিয়ে সে মানুষটা গর্ব করতে পারে যে জীবন মানুষকে ঘৃণা ব্যতীত কিছু দিতে পারে না সেটা কি প্রকৃত জীবন বলে যে বন্ধু মহল খারাপ পথের দিকে ধাবিত করে সেই বন্ধু কখনোই কোনদিনও প্রকৃত বন্ধু হতে পারে না যে মানুষ ভুল মানুষের সাথে উঠা বসা করতে করতে সঠিক মানুষকে ভুলে যায় যে মানুষ ভুল মানুষের সঙ্গে চলতে চলতে তার বর্তমান কে ভুলে যায় তার অতীতকে ভুলে যায় সে কোনদিনও প্রকৃত মানুষ হতে পারে না একজন প্রকৃত মানুষ হতে গেলে পার ভিতর ন্যূনতম বিবেকবোধ থাকতে হয় মনুষত্ববোধ থাকতে হয় ভালো মন্দ বিচার করার ক্ষমতা থাকতে হয়, একজন মানুষ যদি তার ভালো জ্ঞান কে খারাপ কাজে ব্যয় করে পাখি ধরে নেয়া যায় সে কোনদিন ভালো ছিল না জ্ঞানী ছিলই না নীতিবান ছিলনা বিবেকবান ছিলনা। এই সেই সমাজ যে সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের স্থান হয় এই তো সেই সমাজ যে সমাজে টাকার ক্ষমতাবলে মানুষকে সম্মানিত করা হয় কিন্তু আড়াল থেকে তাকে ঠিকই ধিক্কার দেয়া হয় আড়চোখে দেখা হয় মন থেকে কখনোই সেই মানুষটাকে কোন মানুষই ভালোবাসে না ভালোবাসতে পারে না মানুষ কি মিথ্যা ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে মানুষ কি ভুলের পথে চলতে চলতে নিজের বৌদি সত্তাকে হারিয়ে ফেলতে পারে এটা সেই সমস্ত মানুষদের না দেখলে বোঝা যাবে না বোঝা যেত না। আমি এই সমাজেরই একজন ধুকে ধুকে চলা মানুষ আমার জীবনে গর্ব করার মতো কিছু নেই আমি এই সমাজে এমন কোন পরিচয় বহন করিনা যার দ্বারা আমি উপকৃত হব আমার এই সমাজে এমন কোন উচ্চস্থানে আসীন নয় যার জন্য আমি আলাদাভাবে মানুষের কাছে সুবিধা নিতে পারব আমি নিরাশ অগ্রস্থ মানুষ কখনো আশায় বুক বাধি না যারা আশাবাদী মানুষ তারা আশায় আশায় থেকে যায় অনন্তকাল কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি পরে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করে যদিও আশাহীন জীবন অন্তঃসারশূন্য যে জীবনের কোন মানে নেই যে জীবনের কোন মূল্য নেই আমি প্রতিদানহীন মানুষ আমি কোনদিনও প্রতিদানের আশা করি না আমার হাত থেকে যেটা চলে যায় সেটা আবার ফিরে আসবে প্রতিদানস্বরূপ সেটা কখনোই কল্পনা করি না মনের ভিতর যদি স্থির বাসনা করি প্রতিদানের আশায় থাকে তাহলে আমাকে অবশ্যই সেইসব আশাবাদী মানুষের মতো হয়ে বেঁচে থাকতে হবে যার কোনো ভবিষ্যৎ নাই যার ভবিষ্যৎ বলতে কিছু নেই তাইতো আমি এই পৃথিবীর পথে প্রদক্ষিণ করছি কোন প্রতিদানের আশায় নয় আমি শিখে গেছি কিভাবে একা থাকতে হয় আমি শিখে গেছি প্রতিদিন কিভাবে একা একা কাঁদতে হয় যন্ত্রনা গুলো উপভোগ করতে হয় নিজের কষ্টকে দূর করতে হয় কিভাবে সেটা আমি শিখে গেছি নিজেকে কিভাবে ভোট দিতে হয় সেটা আমি আজ জেনে গেছি অনেক কষ্টে ও আমি ব্যথিত হই না অনেক যন্ত্রণায় আমি কখনো কাতর হই না আমি এক সময় পরনির্ভরশীল ছিলাম আমি শিখে গেছি আমি শিখে গেছি কিভাবে নিজের উপর নির্ভরশীল হতে হয় বহুদিন একা একা কেঁদেছি এখন আর চোখে অশ্রু আসে না এখন আর কোনো কষ্টকে কষ্ট বলে মনে হয়না এজন্যই হয়তো বেঁচে আছি এই জন্যই হয়তো দেখতে পাচ্ছি পৃথিবীকে নতুন করে ছাড়া প্রতিদিন নিজের পৃথিবীটাকে একেকটি পিন্ডের সাথে খোলামেলা ভাবে উদযাপন করে তারা হয়তো তাদের রাজ্যে সুখে আছে যদিও সে রাজ্য সম্পর্কে আমার কোন ধারণা নেই ওয়াকিবহাল না সে রাজ্য বিষয়ে আর নাইবা বললাম মানুষ তার হারানো গৌরব কোনদিন ফিরে পাবে না মানুষ তার হারানো অতীত কোনদিন ফিরে পাবে না সেই সব পথ হারানো স্মৃতি এক একটা দিনের মতোই পরিষ্কার একটি দিন গত হলে যেমন সেটা আর ফিরে পাওয়া যায় না সময় যেভাবে সময়ের জালে আবদ্ধ করে নিয়ে যায় অন্ধকারের দিকে ঠিক তেমনি করে সময় সে মানুষগুলোকেই দেখা দেয় যে মানুষগুলো তার জীবন থেকে অনেক কিছু হারিয়েছে সেটা সে ধরতে পারো কার না পারুক তবুও তার সামনে দিয়ে বয়ে যায় এবং একদিন তার নতুন জীবনের পথ উন্মোচিত হবে পাবে নতুন করে যা কিছু হারিয়েছিল সে আর কেউ নয় একজন প্রকৃত মানুষ।
loading...
loading...
'একটি দিন গত হলে যেমন সেটা আর ফিরে পাওয়া যায় না সময়; যেভাবে সময়ের জালে আবদ্ধ করে নিয়ে যায় অন্ধকারের দিকে ঠিক তেমনি, আমাদের জীবন থেকে অনেক কিছু হারিয়েছে সেটা সে ধরতে পারুক আর না পারুক তবুও তার সামনে দিয়ে বয়ে যায়।'
loading...
পৃথিবী এখন অনেকটা সুখী। ফিরিয়ে দিচ্ছে তার উপর করা অত্যাচার।
loading...