ফুলের ছবিটি আমারই তোলা সেটা থেকে জুম করে এই অংশটুকু নেওয়া হয়েছে। ফুলটির সাথে আমাদের জীবনের বেশ কিছু সামঞ্জস্য খুঁজে পেয়েছি। নিচে সেগুলো পর্যায়ক্রমে তুলে ধরছি।
১. ব্যক্তি স্বাতন্ত্র: লক্ষ্য করুন ফুলের প্রত্যেকটি পাপড়িই আলাদা রকমের। একটার সাথে আরেকটার মধ্যে কোন না কোন পার্থক্য আছেই। আমাদের সমাজেও প্রত্যেকটি মানুষ একে অন্যের থেকে আলাদা।
২.পারষ্পরিক সহযোগিতা: লক্ষ্য করুন নিচের দিকের একটি পাপড়ির মাথাটা ভেঙে গেছে। আর তাকে সাপোর্ট দিয়ে রেখেছে পাশের পাপড়ি। যার জন্য অন্যান্য পাপড়ির মতো সেটিও স্বাভাবিকের মতই দাঁড়িয়ে আছে। এটাকে যদি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত কিংবা প্রতিবন্ধী মানুষের সাথে তুলনা করা হয় তবে সমাজের সুস্থ, সাবলম্বী মানুষদের সাহায্য সহযোগিতায় অস্বাভাবিকরাও মূলধারায় আসতে পারে।
৩. একই সমাজে বিভিন্ন গোত্র: লক্ষ্য করুন ফুলগুলো মধ্যে ডানপাশে ৩টা, তার নিচে চারটা এবং তার উপরেই পাঁচটি ও শেষে একটা মিলে ফুলটি গঠিত। অর্থ্যাৎ মতাদর্শ কিংবা সমাজের অন্য কোন প্রভাবকের ফলে একই প্রজাতির মধ্যে বিভিন্ন ক্ষুদ্র দলের সৃষ্টি হয়।
৪. সমাজ নিয়ন্ত্রক: দেখুন ফুলগুলোর পাপড়ির থেকে উচ্চ স্থানে আছে ফুলের গর্ভধারণ প্রয়োজনীয় উপাদান। পাপড়িগুলো সরাসরি প্রজননে কাজ করে না। পরাগায়নের জন্য সাহায্য করে মাত্র। এটা এমন ভাবে হতে পারে যে, আমাদের সমাজের একটা উচ্চ শ্রেণি থাকে যারা সকল কাজ পরিচালনা করে। সাধারণ মানুষ সেখানে কেবল প্রভাবক মাত্র। নিজে থেকে কোন কাজ করতে পারে না। আবার এভাবে যদি ভাবা যায় ফুলের পাপড়িগুলোই গর্ভাশয় সহ প্রয়োজনীয় উপাদানকে নির্বাচিত করেছে প্রধান অংশ হিসেবে যারা সকল কাজ করবে। এটাকে গণতন্ত্রের সাথে সম্পর্কিত করা যেতে পারে যেখানে পাপড়িগুলো না থাকলে পরাগায়নই হবে না। অর্থাৎ মানুষ ছাড়া গনতন্ত্র সম্ভব নয়।
৫. ফুলের রং: দেখুন ছবির ফুলটির রং হলুদ। এই ঝোপের সব ফুলই হবে হলুদ। আবার অন্য ঝোপের সব ফুল হয়তো আবার অন্য রংয়ের। ফুলের ঝোপটিকে একটি দেশ/ মহাদেশ বা বৃহত্তর কোন অঞ্চল ভাবলে দেখা যাবে এক একটা অঞ্চলের মানুষের গায়ের রং আলাদা, কেউ সাদা, কেউ কালো, কেউ মিশ্র।
৬. সমাজে মানুষ: দেখুন প্রতিটি পাপড়ি আলাদা আলাদাভাবে নিজে সুন্দর না। কেউ লম্বা কেউ বেঁটে, কেউ ভাঙা… অথচ সবাই মিলে একটি সুন্দর ফুল। অর্থাৎ সমাজের একত্রে সবাই মিলে গঠিত হয় একটি আদর্শ সমাজ। সামগ্রিকভাবে সবাই সুন্দর।
৭. প্রতিটি মানুষ সম্ভাবনাময়ী: এই ফুলটি নতুন বংশধর সৃষ্টির জন্য জন্মগতভাবে প্রস্তুত। অথচ বাহ্যিক প্রভাবক ঝড় বৃষ্টি, ফুল ছিড়ে ফেলা ইত্যাদি কারণে সকল সম্ভবনার সমাপ্তি ঘটতেই পারে। মানুষও তো একইভাবে সম্ভাবনাময়ী।
৮. জীবনে দাঁড়ানো: ফুলটি শক্তিশালীভাবে দাড়িয়ে থাকতে তার মজবুত ভিত্তি প্রয়োজন হয়েছে যা সেই নিজেই গড়ে তুলেছে। একটা মানুষকেও জীবনের দাঁড়িয়ে উঠতে হলে নিজেই জীবনকে গড়ে নিতে হয়; অন্য কেউ তা করে দেয় না।
৯. মানুষের ফোকাসড হওয়া: ফুলটি তার সমগ্র সৌন্দর্য, তার ক্ষমতা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে যার লক্ষ্য সমাজে সবার সামনে ফোকাসড হওয়া। মানুষ ও সেই ভাবেই চাই সব জায়গায়তে ফোকাসড হতে।
এগুলো আমার নিছকই ভাবনা। কিন্তু আমার কাছে জিনিসগুলো বেশ অর্থপূর্ণ মনে হয়েছে।
—
শিক্ষার্থী
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
loading...
loading...
নিখুঁত প্রকাশ।
loading...
আপনার মনোভাবনা আমাদের মতো পাঠকের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন এবং সবাইকে নিয়ে নিরাপদে থাকবেন।
loading...