৭৮।
রাশেদ সাহেব উপরে এসে এবারে কাপর বদলিয়ে বিছানায় বসে একটা সিগারেট জ্বালালেন। আবার টেলিফোনের কথা মনে হলো। এখানে কাল ঈদ আমাদের দেশে পরশু ঈদ। মেয়েদের কথা মনে হলো। ভাগ্যের অন্বেষণে অনিশ্চয়তার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা বাবাকে ছাড়া কি ভাবে ওরা ঈদ করবে? ওরা বড় হয়েছে সবই বুঝে। ওদের মা কিভাবে ওদের নিয়ে বাড়ি ভরা আর সবার সাথে একটা বিরূপ পরিবেশে দিনটা কাটাবে? কেওতো ওদের মানসিক অবস্থা বুঝবে না, বুঝতে চাইবে না। ওদের মনে যে কি ঝড় বইবে তা কি কেও বোঝার চেষ্টা করবে? এই সমস্ত কিছু মিলিয়ে একটা জটিল রকমের ছন্নছাড়া বিষণ্ণতায় ভরে উঠলো মন। ঘুমের কোন ভাব নেই চোখে মনে। আবার আর একটা সিগারেট বানালেন। বিছানায় হেলান দিয়ে শুয়ে পায়ের উপর লেপটা টেনে নিলেন, ঠাণ্ডা লাগছে একটু। কেন এমন হলো? গণ্ডগোলটা কোথায় খোঁজার চেষ্টা করছেন। ফেলে আসা জীবনসাগর মন্থন করেও কোন কূল কিনারা পেলেন না। বার বার মনে হচ্ছিল ভাই হয়তো বলেনি কাল লন্ডন যাবার পথে আপনাকে নিয়ে যাব। কিন্তু যাবার পথে সে ঠিকই আসবে, না এসে পারবেনা। সে এখানে থাকবে আর বিদেশে এই প্রথম ভাই একা ঈদ করবে, তাই কি হয়?
ছোট বেলায় স্কুল থেকে ফেরার পথে মায়ের দেয়া টিফিন বাবদ দুই পয়সা দিয়ে দুইটা কমলা কিনে একটা নিজে খেয়ে আর একটা পকেটে করে নিয়ে আসত। ছোট্ট পকেটের মধ্যে এতো বড় কমলা ধরত না, কোন রকমে ঠেলে একটুখানি ঢুকিয়ে এক হাতে বইয়ের ব্যাগ আর অন্য হাতে কমলা চেপে ধরে রাখতে হোত। বাগানে ঘেরা ঝোপের আড়াল থেকে গেট দিয়ে ঢুকেই দেখত ছোট ভাই দরজার সামনে ঘরে উঠার সিঁড়িতে বসে আছে। তার হাতে কমলাটা দিতেই কি যে খুশী! মনে হোত পূর্ণিমার সমস্ত জ্যোৎস্না যেন তার মুখে এসে পড়েছে। আজও মনে পরে সে দৃশ্য, আম্মা আম্মা ভাইজান আছছে বলেই উঠে ভাইজানকে জড়িয়ে ধরত। দুই ভাই এক সাথে ঘরে ঢুকত, এ যে সেই ভাই!
loading...
loading...
ধারাবাহিকটি কন্টিনিউ করার জন্য ধন্যবাদ বন্ধু।
loading...
শুভেচ্ছা কবি খালিদ ভাই।
loading...
রাশেদ সাহেব এর জীবন গল্প পড়ে চলেছি ভাই।
loading...
ভালোবাসা ভাইজান।
loading...
অনেক অনেক শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা। শুভ সকাল।
loading...