২৯।
রাশেদ সাহেব ওর মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে আর ডাকতে পারলো না। কাত হয়ে থাকা মনির মাথাটা টেনে নিজের বুকে এনে নিলেন, মনি একটু কাত হয়ে রাশেদ সাহেবের বুকে ঘুমাচ্ছে। মনির মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবছিলেন সে কত সুখী। মনির মত স্ত্রী পেয়েছে। যে তার সমস্ত সত্তা দখল করে রয়েছে, ওকে ছাড়া একটা দিন তো দূরের কথা একটা বেলাও চলে না। তার মনের কথা গুলি কেমন করে যেন সব ঠিক ঠিক বুঝে ফেলে। অবাক লাগে। ভালবাসা কি এমনই গভীর? কত গভীরে গেলে এমন হতে পারে? কই আমি তো পারি না! ভাবতে ভাবতে সেও এক সময় ঘুমিয়ে পরে। হঠাৎ মাইকে এয়ার হোস্টেস এর কণ্ঠে চমকে উঠলেন, প্লেন অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই হিথরো এয়ারপোর্টে নামবে, সেখানকার তাপ মাত্রা দুই ডিগ্রী এবং আবহাওয়া সম্পর্কে জানিয়ে যাত্রীদের সেই অনুযায়ী পোষাক পরে নেবার কথা জানিয়ে সিট বেল্ট বেঁধে নেবার অনুরোধ জানালো। মনিরার ঘুম তখনও ভাঙ্গে নি। রাশেদ সাহেব আস্তে করে ডাকলেন, মনি ওঠ, লন্ডন এসে গেছে! মনির সিট বেল্ট বেঁধে নিজেরটাও বেঁধে নিলেন।
আবার ডাকলেন, মনি ওঠ!
মনি চোখ মেলে চেয়ে জিজ্ঞেস করলো
-কি হয়েছে?
-লন্ডন এসে পরেছি প্লেন নামছে।
মনি জানালা দিয়ে দেখল। ছবির মত সাজান সুন্দর বাড়ি ঘর, টেমস নদী, আই অফ লন্ডন পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। একটা ঝাঁকুনি দিয়ে প্লেনের চাকা মাটি ছুঁয়ে গেলো। একটু পরেই প্লেন হিথরো এয়ারপোর্টের তিন নম্বর টার্মিনালের সামনে থেমে গেলো। রাশেদ সাহেব ব্যাগ থেকে মনির গরম কাপড় বের করে মনিকে পরিয়ে দিলেন, পায়ে মুজা বদলে গরম মুজা পরিয়ে দিলেন, এছাড়া হ্যান্ড গ্লোভস আর গলার মাফলার মনির হাত ব্যাগে ভরে দিলেন।
গ্যাং ওয়ে টেনে প্লেনের দরজার সামনে আনতে দরজা খুলে দিল। যাত্রীরা একে একে সবাই নেমে গেলো। টার্মিনালের দোতলার উপর বেশ অনেকটা পথ হেঁটে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে বেশ দীর্ঘ কিউর পিছনে। তাদের পালা এলে কাল ইমিগ্রেশন অফিসার তাদের পাসপোর্ট দেখে সিল দিয়ে ফেরত দিয়ে দিল। রাশেদ সাহেব এক হাতে ব্যাগ আর অন্য হাতে মনিরার হাত ধরে লাগেজ কনভেয়ারের কাছে এসে দাঁড়ালো। ওদের মালামাল কোন বেল্টে আসছে তা মনিটরে দেখে নিয়ে সেখানে যেয়ে দাঁড়ালেন। ওদের মাল আসতেই বেল্ট থেকে নামিয়ে কাস্টমের সবুজ গেট দিয়ে বেরিয়ে এসে বাইরে যেখানে যাত্রীদেরকে রিসিভ করার জন্য সবাই এসে অপেক্ষা করে সেখানে এসে ফিরোজকে খুঁজে না পেয়ে মনিরাকে বললো তুমি এখানে এগুলি নিয়ে বসে থাক আমি ফিরোজকে খুঁজে বের করি। তন্ন তন্ন করে খুঁজেও ফিরোজকে না পেয়ে আবার মনির কাছে ফিরে এলেন।
মনি জিজ্ঞেস করলো, পেলে না?
-দেখছি না।
-তাহলে কি আসে নি?
-না আসলেও আসবে।
-তুমি কি ঠিক ভাবে জানিয়েছিলে?
-কি যে বল, তারিখ, ফ্লাইট নম্বর, সময় সব জানিয়েছি। আমার মনে হচ্ছে ওরা রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে আটকে রয়েছে।
-এখানেও ট্রাফিক জ্যাম আছে নাকি?
-থাকবে না মানে, এখন পুরো পিক টাইম! দাঁড়াও আর একটু দেখি, তারপর ফোন করি।
বলেই তিনি মনির পাশে বসলেন।
-আমার কিন্তু ভয় করছে আসবে কি না, যদি না আসে তাহলে কি করবে এখন?
-কী যে বল তুমি আসবে না কেন, অবশ্যই আসবে। একটু অপেক্ষা কর।
প্রায় আধা ঘণ্টা পার হয়ে গেলো এর মধ্যে ওকে না দেখে এবার রাশেদ সাহেবও একটু চিন্তিত হলেন। উঠে গিয়ে দোকান থেকে সাথে থাকা পাউন্ড ভাঙ্গিয়ে এনে ফিরোজের বাসায় ফোন করলেন।
ফিরোজের মেয়ে জানাল আব্বু আম্মু দুজনেই আপনাদের রিসিভ করতে চলে গেছে, আম্মু একটু বাইরে কাজে গিয়েছিলো ফিরতে দেরি হওয়াতে দেরি হয়েছে।
-আচ্ছা ঠিক আছে তা হলে আমি ওকে মোবাইলে ফোন করছি।
লাইন কেটে দিয়ে আবার মোবাইলে ফোন করে সরাসরি ফিরোজের সাথে কথা হলো।
-হ্যাঁ রাশেদ আমরা আসছি, তোমরা কি তিন নম্বর টার্মিনালে আছ?
-হ্যাঁ।
-তাহলে ওখানেই থাক আমাদের আরও আধা ঘণ্টা লাগবে।
loading...
loading...
নিরন্তর শুভেচ্ছা প্রিয় বন্ধু।
loading...
আলহামদুলিল্লাহ!
loading...
লেগে থাকছি কবি খালিদ ভাই।
loading...
বেশ বেশ বেশ! দরকার হলে আঠা লাগিয়ে নিবেন।
loading...
যখন থেকে পোস্ট ছোট হয়েছে পড়তে সুবিধা হচ্ছে ভাই।
loading...
বেশ ভাল লাগল জেনে। আপনাদের কথায়ই পর্ব ছোট করেছি।
loading...
চলুক।
loading...
দোয়া করবেন ভাই।
loading...
loading...
loading...
*

loading...
ধন্যবাদ কবি ভাই।
loading...
শ্রদ্ধেয় কবি, আপনার লেখা পড়ে ভাবছি; যদি আমি এমন লিখতে পারতাম! তা পারবো না। তবে আপনার লেখা পড়ে শিখে নিচ্ছি কিন্তু! শুভেচ্ছা সহ শুভকামনা থাকলো।
loading...
ধন্যবাদ নিতাই'দা! আসলে আমি জানিইনা আমার লেখা থেকে শেখার কিছু আছে কিনা!
loading...