রেস্টুরেন্ট, বুরিতো ও একটি অন্যরকম অভিজ্ঞতা:
মেক্সিকো নামের দেশটার সাথে যাদের পরিচয় আছে তাদের জানা থাকার কথা বুরিতো নামের সুস্বাদু খাবারের কথা। অথবা মেক্সিকান চিলি, যার প্রাধান্য কেবল খাবার টেবিলেই নয়, উপন্যাস ও মুভিতেও এর ব্যাপক ব্যবহার। মোদ্দা কথা, মেক্সিকো মানেই ঝাল! মার্কিন অঙ্গরাজ্য নিউ মেক্সিকো এক সময় মেক্সিকোরই অংশ ছিল। এবং এখানে লাখ লাখ বাসিন্দাদের অরিজিন সীমান্তের ওপারের দেশ মেক্সিকো। বুরিতোর প্রস্তুত প্রণালী খুবই সহজ। চাই একটা আটা রুটি। দেখতে অবিকল আমাদের রুটির মত। আলাদা রান্না করা হয় গ্রাউন্ড বীফ, সাথে ডিম, আলু, চীজ, ক্যাপসিগাম এবং অবশ্যই মরিচ বাটা। অর্ডার করতে গেলে প্রথমেই জিজ্ঞেস করবে, রেড না গ্রিন! অর্থাৎ লাল না কাঁচামরিচ বাটা! অর্ডার দেয়ার পর বেশকিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হয়। কারণ প্রায় সব রেস্টুরেন্টেই ফ্রেশ তৈরি করে দেয়।
ব্লেইকস লটাবারগার রেস্টুরেন্ট আমার বিচারে স্বাদে গন্ধে সবার চাইতে ভাল বুরিতো বানায়। আমি সহ কাজের অনেকে এই বুরিতোর ভক্ত। এমন একটা রেস্টুরেন্ট অফিস হতে পাঁচ মিনিটের ড্রাইভ। এক সকালে অর্ডার দিয়ে টেবিলে বসে আছি। সময় যায় কিন্তু আমার বুরিতো আসেনা। আমার পরে এসে অর্ডার করে অনেকে বুরিতো নিয়ে চলে যাচ্ছে অথবা বসে খাচ্ছে। একে-তো ক্ষুধার্ত তার উপর পার করছি অফিসের সময়। অনেকে অনলাইনে অর্ডার করে এবং আসা মাত্র সংগ্রহ করে ফিরে যায়। তাই আমার পরে এসে আগে চলে যাওয়ার অভিযোগ সবসময় সত্য নাও হতে পারে। তাই এ নিয়ে অভিযোগ করাটা যুক্তিযুক্ত মনে করিনি।
চল্লিশ মিনিট পার করার পর অধৈর্য হয়ে কাউন্টারে গেলাম। ভাগ্য ভাল, ওখানে ক্যাশিয়ার নয়, খোদ ম্যানেজার দাঁড়িয়ে গ্রাহকদের সেবা করছিলেন। ক্রয় রশিদ দেখিয়ে জানতে চাইলাম আর কতটা দেরী হবে আমার খাবার তৈরি হতে। রশিদ হাতে নিয়ে উলটে পালটে দেখে চোখ কপালে উঠলো। জানতে চাইলে এতক্ষণ ধরে এখানেই অপেক্ষা করেছি কি-না। উত্তরে হ্যাঁ বলতেই সে ব্যস্ত হয়ে কিচেনে গেল। এবং ওখানকার সবাইকে বাইরে এনে আমার সামনে দাঁড় করলো। আমি অবাক হলাম। একে একে সবাই আমার কাছে ক্ষমা চাইল। ভুলটা কোথায় হয়েছে তা অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিল। রাগ পুষে রাখার মত আর অবস্থা ছিলনা আমার। মৃদু হাসি দিয়ে আমিও মেনে নিলাম ভুল বুঝাবুঝির পর্ব।
খাবার হাতে নিয়ে ফিরে আসাতে গিয়ে অবাক হলাম। ওরা আমার হাতে একটার বদলে দুটো বুরিতো ধরিয়ে দিয়েছে। সাথে একটার জায়গায় দুটো অরেঞ্জ জুস। দিনটা ছিল বুধবার। ম্যানেজার হাত একটা কাগজ ধরিয়ে বলল সপ্তাহের বাকি দুটো দিন চাইলে বিনা-পয়সায় বুরিতো ও যেকোন একটা ড্রিংক নিতে পারি।
রেস্টুরেন্টের বাইরে পা রাখতেই মনটা ভাল হয়ে গেল। পৃথিবীটা এখনো ততটা খারাপ হয়ে যায়নি যতটা আমরা ভেবে থাকি।
loading...
loading...
অসাধারণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন ওয়াচডগ ভাই।
loading...
ভাল লেগে থাকলে লেখাটা সার্থক। ভাল থাকবেন।
loading...
সুন্দর অভিজ্ঞতা। মাঝে মাঝে ফুড ট্রাভেল দেখি ইউটিউবে। ফুড বিষয়ক ট্রাভেলারদের ফলোও করছি। ভালোই লাগে দেখতে। ধন্যবাদ আপনাকে।
youtu.be/OO9kSxcT9Rg
loading...
টাকো মেক্সিকানদের অন্যতম প্রধান খাবার। যত্রতত্র পাওয়া যায়। আমার জন্যে এগুলোই এখন প্রতিদিনের খাবার। আমি অবশ্য রেড চিলির ভক্ত নই, সবকিছুতে গ্রীণ চিলি। সাথে চিচারন ও সালসা!
loading...
loading...
আপনার শেয়ার করা পোস্টের মাধ্যমে জানা হলো।
loading...
সাথে থাকার জন্যে ধন্যবাদ।
loading...
পড়লাম। দারুণ অভিজ্ঞতা হলো আপনার।
loading...
ভাল থাকবেন।
loading...
loading...
শুভেচ্ছার উত্তর দেবেন কিনা জানি না; তারপরও শুভেচ্ছা রেখে গেলাম।
loading...
আমি কিন্তু আপনাদের আসরে প্রায়ই ঘুরে যাই। হয়ত অলসতার কারণে সবার সাথে যোগযোগ সময়মত করা হয়না। ঃ)
আপনিও ভাল থাকুন।
loading...
loading...
অভিনন্দন ভাই।
loading...
ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকবেন।
loading...