শ্রদ্ধায় ও স্মরণে ….
‘হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে, সিংহল-সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয়-সাগরে, অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার-অশোকের ধূসর জগতে…’
এই বিখ্যাত লেখাটি যিনি বাংলা সাহিত্যে ভাণ্ডারে রেখে গেছেন সেই প্রেমের কবি জীবনানন্দ দাশের জন্মদিন আজ। জীবনানন্দ দাশ নিঃসন্দেহে সর্বকালের সর্বোৎকৃষ্ট নিঃসঙ্গতার কবি। বিশ্ব ইতিহাসে ক্ষণজন্মা প্রতিভাশীল প্রচার বিমুখ অন্যতম এক কবির নাম জীবনানন্দ দাশ। তাই সাড়ে আট শত কবিতার বেশী কবিতা লিখলেও তিনি জীবদ্দশায় মাত্র ২৬২টি কবিতা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও কাব্য সংকলনে প্রকাশ করতে দিয়েছিলেন। তার জীবদ্দশায় তার নামের প্রতি কোন সুবিচার হয়নি বললেই চলে।
######
আজ আরও এক মহান ব্যাক্তির মৃত্যু দিন যাঁকে আমরা প্রায় ভুলেই গেছি। তিনি হলেন ….
জিওর্দানো ব্রুনো।
কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক, সৌরজগতের ধারণা সংক্রান্ত বইটির নাম অরবিয়াম। বইটি ১৫৫৯ সালে প্রকাশের পর জিওর্দানো ব্রুনো তা প্রচারে নামেন। রোমের ধর্মযাজক এই মতবাদের বিরোধীতা করে, তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে, তাঁকে দণ্ডিত করেন। উক্ত দণ্ড কার্যকর করার জন্য নিয়ে যাওয়া হল রোমের বধ্যভূমিতে। রক্তলাল পতাকা, সব গির্জার ঘণ্টা বেজে উঠল, আনুষ্ঠানিক পোশাকে শত-শত যাজক মৃত্যুকালীন স্তব গাইতে লাগল। খুঁটিতে বাঁধার আগে মুক্তি লাভের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। যা ছিলো তাঁর প্রচারিত তত্ত্ব ভুল, একথা স্বীকারের জন্য। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ১৬০০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে একটি মঞ্চে খুঁটিতে বেঁধে ব্রুনোকে পুড়িয়ে মারা হয়।
ব্রুনোর জন্ম দক্ষিণ ইতালির নোলা নগরে ১৫৪৮ খ্রিস্টাব্দে, কোপার্নিকাসের মৃত্যুর ৫ বছর পরে। ইতালীয় এই ঘটনা আমাদের নিয়ে যায় সেই প্রাচীন কাপুয়া থেকে রোম যাবার আপ্পিয়ান মহাপথের ধারে, মনে করিয়ে দেয় যার দু’ধার দিয়ে স্পার্টাকাসের ছয় হাজার মৃত্যু প্রতীক্ষারত দাস সঙ্গীকে ক্রশে ঝুলিয়ে রাখার কথা, যুদ্ধে সময় স্পার্টাকাসকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলার কথা। ফলে তাঁর শরীর শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি, রোমানদের সাক্ষ্য থেকে জানা যায় বিদ্রোহীরা মহা সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন। স্পার্টাকাসের দোষ ছিল তিনি দাসদের দাসত্ব থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, গ্ল্যাডিয়েটরদের নির্মম অমানবিক খেলা থেকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন। মানবিক জীবনের জন্য সংগ্রামের পথনির্দেশনা দিয়েছিলেন, যারা দাসত্ব ও গ্ল্যাডিয়েটরদের মতো পশুর জীবনকে নিয়তি ভেবে প্রতিবাদ করতে ভুলে গিয়েছিল। আর তাঁর দেড় হাজার বছর পরে মধ্যযুগীয় কুসংস্কার, হাজার বছরের পুরনো চিন্তার-দাসত্ব থেকে বের করে মানুষকে বিজ্ঞানের আলোয় নিয়ে আসতে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন জিওর্দানো ব্রুনো। বিজ্ঞানের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, যে-বিজ্ঞান মানুষের জীবন-যাপনে স্বাচ্ছ্যন্দ এনে দিয়েছে, স্বপ্ন দেখিয়েছে বৃহত্তর মানবতার, সমগ্র মানব জাতিকে এগিয়ে নিয়ে নক্ষত্রে যাবার।
loading...
loading...
জিওর্দানো ব্রুনো। নামটি বেশ অজানাই ছিলো। আপনার এমন উৎসর্গের মাধ্যমে আজ স্মরণ করিয়ে দিলেন। শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য কবিবন্ধু রিয়া রিয়া।
loading...
ধন্যবাদ প্রিয় বন্ধু। ভালো থাকুন।
loading...
স্মৃতিজাগানিয়া।
শ্রদ্ধা এই মনীষীদের।
loading...
ধন্যবাদ প্রিয় কবি এবং গল্পকার। অনুপ্রাণিত হলাম।
loading...
ভালো লাগলো। এরকম আরও বহু… বহু কীর্তিমান মানুষ এই অগ্রসরমান বিশ্ব সভ্যতায় নানাভাবে তাঁদের অবদান রেখে গেছেন। এখনও রেখে চলেছেন। উভয়কে আপনার লেখার সঙ্গে সঙ্গে আমিও ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
জীবনানন্দ দাশ’কে নিয়ে আপনার লেখার শেষ লাইনটি ঠিক বুঝলাম না। কী বোঝাতে চেয়েছেন! তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছিলেন। তাঁর "বনলতা সেন" কাব্য গ্রন্থ পাঠক সমাজে দারুণ সমাদৃত হয়েছিল, অন্যান্য কাব্য গ্রন্থও। ব্যক্তিগত জীবনে নানান সমস্যা ছিল তাঁর, আরও অনেকেরই ছিল।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
loading...
আমার মূল্যায়ণ আমি জানিয়েছি অর্ক দা। এর বেশী ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই।
ধন্যবাদ।
loading...
শ্রদ্ধার্ঘ এই বিশিষ্ট লেখকদের জন্য। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা কবি রিয়া।
loading...
ধন্যবাদ প্রিয় কবি দা। ভালো থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
loading...
বিনম্র শ্রদ্ধা, বিদগ্ধ লেখকদের সম্মানে । আপনার জন্য শুভ কামনা । ভাল থাকুন।
loading...
আপনার জন্যও শুভকামনাি দিদি ভাই।
loading...