কোলকাতা বইমেলা ২০১৯
দশ তারিখ বইমেলা গেছিলাম! সল্ট লেক করুণাময়ী! জায়গাটা ভালোই কিন্তু অনেকটা ছোট। খুব সাজানো গোছানো হয়েছে। সবার শেষ গেটে রয়েছে আমাদের লিটল ম্যাগাজিন, মানে নয় নম্বর গেট দিয়ে ঢুকতেই কিছুদূর যেতে লিটল ম্যাগাজিন চত্বর। আগের বছর ভালো জায়গায় ছিল মুক্তমঞ্চের কাছে, এ বছর পিছনে! সব মিলিয়ে স্টল গুলো বেশ পরিপাটি। বেশ কিছু স্টলে তো ভিড়ে ঢোকাই যাচ্ছে না, ব্যাপারটা হচ্ছে যেখানে বিক্রি হওয়ার সেখানে হিউজ বিক্রি হচ্ছে; রবীন্দ্রসংগীতের গুনগুন ভেসে আসছে, অডিটোরিয়ামে আধঘন্টা অন্তর অনুষ্ঠান ও হয়ে যাচ্ছে, জমজমাট বাঘেলু পরিবেশ বলা যেতে পারে। বই প্রকাশ কবিতা পাঠ ও চলছে তবে কোথায় তাঁর হদিশ পাওয়া গেল না। সবাই কে দেখে এটাই মনে হচ্ছে ম্যানিকিওর প্যাডিকিওর করে ছবি তুলতে আসছে। সদ্য বিউটি পার্লার থেকে বেরিয়ে চলে আসছে ছবি তুলতে, বিধাননগর পুলিশ বরাবরের মতো ভালো সব সুবিধা ই দিচ্ছেন; আর একটা সুবিধে” দিলে ভালো হত সেটা “একটা বিউটি পার্লার” সামনে বসাতেন, আমার মনে হয় বই র থেকে সেখানে বেশী ইনকাম হতো। ঠিক বললাম কিনা ভেবে দেখবেন, আমরা যারা দূর থেকে যাই ঝড়োকাক তাঁরাও সেলিব্রিটি সেজে যেতাম, অনেক বই কেনার ইচ্ছা ছিল। বিশেষত বিনোদ ঘোষালের রূপনগরের পিশাচিনী”—টার্মিনাসের একটি বই কিনলাম। এমনিতে আমার স্পষ্টবাদী সহজ সরল মানুষ পছন্দ। যাক উনার স্পষ্টবাদী কথা ভালোই, পুরো চত্বর টাই চোখ বুলালাম। তিরিশ পেজে র চটি বই ১০০ টাকা। ভাবা যা য় তাই লিটল ম্যাগাজিন মধ্যবিত্তদের তো পুরো মেরে ফেলবে। যারা লেখে তাঁদের ও লেখক কপি টা তো দরকার তাই না। যাক প্রিয় লেখক কবি, যাদের কিনতে পারিনি পরে কিনে নেব!
তাছাড়া উনাদের লেখা তো পড়েই থাকি/ বিনোদ ঘোষাল, মলয় রায় চৌধুরী, অনুপম মুখোপাধ্যায়, শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্ণব সাহা, বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় অংশুমান কর ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক লম্বা লিস্ট আমার বই এতোগুলো কিনতে গেলে ফকির হয়ে যাব।
পুরো বইমেলা একটানা না ঘুরে একজায়গায় বসে থাকলে মনে হয় বেশী আনন্দ পাওয়া যায়/ রবীন্দ্রনাথের গান সহ গুনগুন আওয়াজ/ বেশ মজাদার/ বইমেলার দুটো অসামান্য চমক “মমতা ব্যানার্জীর বই সহ সাজানো উদ্যান আর ভাষানগরের কবিতা র গাড়ি”/
আমি প্রতিবছর একা ই যাই/ নিজেকে প্রতিবার ই অসহায়/ মনে হয় জোর করে এই জগতে ঢুকে পড়েছি/ কেউ চায় না একা একা অনেকটা অসহায় লাগে/ কিন্তু যখন কিশোর কুমারের গান শুনতে শুনতে হাঁটি খুব ভালো লাগে / আসলে কোন কিছু “ অমিত” আশা ছাড়া উচিত নয়/ এক জায়গার ভাললাগা আর একজায় রিপ্লেশ করে নিন এক দুঃখের জন্য সারাজীবন কষ্ট উচিত নয়/ আগামী জীবনের প্রতি ভরসা রাখা জরুরী/
কাউকেই তেমন চিনি না/ আর আমার ওই যেচে যেচে সেলফি তুলে পরিচয় করতে ও ভালো লাগে না। পরিচয় আছে বই কিনতে হবে এরকম কোন কথা নেই/ ভালো লাগবে দেখতে দেবে তারপরে তো/ যে শুধুমাত্র সেলফির জন্য বইটা কিনল মন থেকে খুলে পড়বে তো !!
শোনা যাচ্ছে অনেকেই বলাবলি করছেন— “বই কিনলাম বন্ধু বলে সারাবছরেও পড়ব কিনা ঠিক নেই।” এই হচ্ছে বইমেলা! দেখে দেখে ই আনন্দ/ মেলা মানে মিলন প্রাঙ্গন / সেরকম কোন কিছু চোখে পড়ে না/ সবাই যে যার আসছে সেলফি তুলছে বেরিয়ে যাচ্ছে/
বয়স্ক লেখক দের ব্যবহার ভালো উনাদের ভদ্রতাটাই আলাদা সবাই নয় আবার / তবে কিছু জন বই সম্বন্ধে বোঝাচ্ছেন/ কিন্তু কথায় অপাত্রে দান”/ গরিব মাষ্টারের বই বড় পাবলিশার ছাপত তাহলে দাম থাকত/
সত্যি কিছু প্রতিভাদের দেখলে কষ্ট হয় / সাহিত্যটা পুরো ই ধাঁধানো পরি হয়ে গেল/
_________________
প্রকাশকাল– সন্ধ্যেবেলা
অরুণিমা মন্ডল
কাকদ্বীপ।
loading...
loading...
কোলকাতা বইমেলার অভিজ্ঞতা জানলাম কবি। আমাদের বাংলাদেশের বইমেলার বিক্রয় পরিবেশ অথবা অন্যান্য বিষয় এবছর সরাসরি দেখতে না পেলেও অনুমান করি … এমনটাই হবে।
আপনাকে ধন্যবাদ।
loading...
যা বলেছেন কিন্তু বাংলাদেশী মানুষের আন্তরিকতা বেশী / সেলফিয়ালা বইমেলা যেন না হয় বইমেলা বইমেলাই সবাই যেন আন্তরিক থাকে
loading...
আপনার অভিজ্ঞতা জানার সুযোগ হলো দিদি ভাই। ভাল লিখেছেন।
loading...
আপনাকে মনে হয় দেখেছি ব্যস্ত ছিলেন সেলফি তুলতে / আমি তো ঝড়োকাকের মতো অবস্থা/ সেলফিতেও ভূত লাগত
loading...
loading...
এবারের মেলায় আমার একটা প্রকাশনা ছিলো। বইমেলা হোক সুস্থতার বহির্প্রকাশ।
loading...
হম দাদা বইমেলা ধনী গরিব মুচি মেথর এক হয়ে যাওয়ার মেলা সেখানে যদি ভেদাভেদ করে দেওয়া হয় প্রজন্ম সাহিত্য কি সেলফি তুলতে শিখবে?
loading...
পরিচিত অনেক কবি লেখক কেই দেখেছি সবাই ব্যস্ত !
loading...
জানেন তো জয় গোস্বামী এখনো ধুতি পরেন প্যান সার্ট নয় সেলফি র জন্য কাঁদতে হয় না ! উনাকে—– নিজের সন্তানকে বাংলা মিডিয়ামে পড়াচ্ছেন–/
loading...
ইদানিং আর বই মেলায় যাওয়া হয় না।
loading...
ঠিক ই করেছেন দিদি যারা ভালো লেখক বা বিশেষ কাজ ছাড়া এমনিতেও কেউ বইমেলা যায় না ওটা একটা স্বার্থ বেচাকেনার জায়গা সাধারনের কোন লাভ নাই বইমেলা মিলনমেলা হয় নি দেখি নি দেখব ও না যা পরিস্থিতি/
loading...
ঈশ! ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি সময়ে কোলকাতা গিয়েছিলাম । থেকেছিও প্রায় বছর দেড়েক । বেশি সময় কাটিয়েছিলাম বড়দি বাড়ি, জলপাইগুড়ি বীরপাড়া। কিন্তু এই বই মেলার কথা তো শুনিনি ! যদি শুনতাম, তাহলে কোলকাতা থেকে বই মেলার পুরো অভিজ্ঞতাটা ইনকাম করে আসতে পারতাম। আসল কথা হলো, ভাগ্যে ছিল না। তো এখন আপনার লেখা পড়ে কোলকাতা বই মেলা বিষয়ে অনেককিছু জানা হলো। সেজন্য আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ ।
loading...
আগের বইমেলা ভালো ছিল ইদানিং তরুন কবি কবিনী দের অতিরিক্ত লাফালাফি তে বিচ্ছিরি হয়ে গেছে /বয়স্ক দের থেকে যে দু চারটা জ্ঞান নেবো তাঁর সুযোগ নাই
loading...