আলো নেভানো যায় না

আলো নেভানো যায় না

যদি কেউ একবার ভাবেন – তিনি কবি।
ঠিক ঐ মুহুর্তেই তিনি ঢুকে পড়েন এক সমীকরণে
কখনো বা সে সমীকরণ হয়ে উঠতে পারে এক জটিল সমীকরণ।

সেই সমীকরণের মান বের করতে গিয়ে কখনো তিনি ক্লান্ত হয়ে যেতে পারেন
হয়তো তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি আর কবি হতে চান না
কিন্তু! তিনি পিছু ফিরতে গিয়ে দ্যাখেন – পিছু ফেরার পথ নেই।

একবার এই সমীকরণে ঢুকে গেলে পিছু ফেরার পথ যে আর থাকে না!
সেখানে থাকে কবিতার এক অদৃশ্য শক্তি
হ্যাঁ! কবিতার এক অদৃশ্য শক্তি তাঁকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে
সে শক্তি ভেংগে বেরিয়ে আসার সাধ্য কার?
সে শক্তি তাঁকে একদিন কবি বানিয়েই ছাড়ে।

কবিতার শক্তি?

অক্ষশক্তি! মিত্রশক্তি!! পরাশক্তি!!!
এবং সমস্ত শক্তির অপ-ব্যাবহার
কেবল কবিতার অদৃশ্য সেই শক্তি
তচনচ করে ভেঙ্গে করে চুরমার!

বাংলার এক মহাণ কবি একটি কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন
উনিশ্য একাত্তর সালের সাতই মার্চে
সাত কোটি মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিল সেই কবিতার শক্তি
মানুষের মননে জাগ্রত হয়েছিল এক দুর্বার অদম্য সাহসী শক্তি

কবিতার সেই অদৃশ্য শক্তি সঞ্চিত হয়ে
পরিনত হয়েছিল এক প্রলয়ংকারী মহাশক্তি
মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছিল সেই বর্বর অপশক্তি
সেই মহাণ কবি’র আলোয় আমরা পেয়েছি আজ আলোকিত স্বাধীনতা।

আমরা জানি, সেই মহাণ কবি’র আলো নিভিয়ে দেয়া হয়েছিল
কিন্তু সেখানে যে দুটি জ্বলন্ত অঙ্গার ছিল তা তারা নাভাতে পারে নি।

তাই একজন কবি
হোক সে যতোই নগণ্য
তাঁকে অসম্মান করা ঠিক নয়
কারণ তাঁর সাথে থাকে কবিতার এক অদম্য অদৃশ্য মহাশক্তি।

যদি কখনো দ্যাখো আলোর চমক
কোনও এক নগণ্য কবি’র মাঝে
হয়তো সে আলো হতেও পারে সুর্যসম যা সে নিজে জ্বলে তুলতে পারছে না
তবে তোমার আলো থেকে একটু আলো দিয়ে তা জ্বেলে দিও।

একটি মোমবাতির আলো থেকে হাজার মোমবাতি জ্বলে উঠলে
সেই মোমবাতির আলো কি কমে যায়?
বরং হাজারো আলোর সমন্বয়ে তৈরী হয় এক তীব্র ঝকমকে আলোর ঝংকার!
যে আলোয় আলোকিত হয় সমাজের সকল অন্ধকার আর কালো অধ্যায়
ভেংগে পড়ে অন্যায় অবিচার আর জুলুমের সব অবকাঠামো গুলো।

সব কবিই এক একটি চোখ জুড়ানো এক অদ্ভুত প্রস্ফুটিত ফুল
ফুলের মাঝে থাকে মধু – থাকে বিষও
যে ভ্রমর মধু চিনতে ভুল করে
সে বিষ পান করে পরাস্থ হয় নিজের কাছে।

তাই কোনও কবিকে অসম্মান করা ঠিক নয়
তাঁর ভেতরের আলোটুকু জ্বলাতে না পারলেও
অন্তত তা নিভিয়ে দেয়া ঠিক নয়।

যদিওবা আলোটুকু নিভিয়ে দিতে চেষ্টা করা হয়
তবে জেনে রেখো – সেখানে দু চারটা জ্বলন্ত অঙ্গার থেকেই যায়
আস্তে আস্তে সব কয়লা আবার জ্বলন্ত অঙ্গার হয়ে একদিন ধপ করে আলো জ্বলে উঠবেই
আস্তে আস্তে একদিন হঠাত সেই আলোর এক মহা-বিস্ফোরণ ঘটবেই।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৫ টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ৫ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ১৭-১১-২০১৮ | ১১:৪৯ |

    কোনও কবিকে অসম্মান করা ঠিক নয়
    তাঁর ভেতরের আলোটুকু জ্বালাতে না পারলেও
    অন্তত তা নিভিয়ে দেয়া ঠিক নয়।

    জীবন সমীকরণে বাস্তবতা পুরোপুরি নিষ্ঠুর না হলেও অম্লমধুর বটে। দারুণ। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    GD Star Rating
    loading...
  2. রিয়া রিয়া : ১৭-১১-২০১৮ | ২০:০৫ |

    অক্ষশক্তি! মিত্রশক্তি!! পরাশক্তি!!!
    এবং সমস্ত শক্তির অপ-ব্যাবহার
    কেবল কবিতার অদৃশ্য সেই শক্তি
    তচনচ করে ভেঙ্গে করে চুরমার!

    অসাধারণ ইলহাম দা। শাণিত লেখা।

    GD Star Rating
    loading...
  3. সৌমিত্র চক্রবর্তী : ১৭-১১-২০১৮ | ২০:১৩ |

    লিখেন না লিখেন না করেও যখন লিখে ফেলেন আপনার লিখা গুলোন অসাধারণ হয়ে আসে ইলহাম ভাই। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    GD Star Rating
    loading...
  4. জাহিদ অনিক : ১৮-১১-২০১৮ | ০:২২ |

     

     

    কবিতার এক অদৃশ্য শক্তি তাঁকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে
    সে শক্তি ভেংগে বেরিয়ে আসার সাধ্য কার?
    সে শক্তি তাঁকে একদিন কবি বানিয়েই ছাড়ে।    

     চমৎকার কবি ইলহাম 

    GD Star Rating
    loading...
  5. মুহাম্মদ দিলওয়ার হুসাইন : ১৮-১১-২০১৮ | ১:৩০ |

    আস্তে আস্তে একদিন হঠাত সেই আলোর এক মহা-বিস্ফোরণ ঘটবেই।

     

    * https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    GD Star Rating
    loading...