ছায়া
ছোট্ট একটা ইঁটের টুকরো পায়ে লেগে ছিটকে পাশের দেওয়ালে লাগলো। ঠিক ছোটবেলায় লাথি মেরে ফুটবলের দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মত। একটা ছায়া স্যাঁত করে সরে গেল। মনে মনে হাসলো সুজন। অন্যরা হলে এতক্ষণে ভয়ে হাত পা পেটের মধ্যে সেঁদিয়ে ফেলতো। মনের ভেতরে থাকা হাসিটা ফিক করে সুজনের ঠোঁটে চলকে উঠলো।
সেই ছোট থেকেই সুজন আলাদা ঘরে থাকে। আলাদা শোয়, আলাদা জগত গড়ে নিয়েছে নিজের। সেই জগতে আর যাই হোক কোনো অশরীরির জায়গা হয় নি। অনেককে দেখেছে বড় হওয়ার পরেও যারা একা থাকতে বা শুতে পারে না। ওদের জন্যে রীতিমত অনুকম্পা বোধ হয় ওর। ওপরের দিকে তাকালো সুজন। নির্ঘাত এক বাড়ীর ছাদ থেকে আরেক বাড়ীর ছাদে কোনো বেড়াল লাফিয়েছে। বড় বড় বাড়ীগুলো এত গা ঘেঁষে উঠেছে এখানে যে গলিটাই দু দিকের দেওয়ালের চাপে কেমন সেই মধ্যযুগের গা ছমছমে অন্ধগলির চেহারা নিয়েছে। ছাদের আলোর নীচে কিছু রাখলে তার ছায়া বিরাট হয়ে নীচে পড়ে। এও সেই রকমই কিছু হবে।
মনটা অন্য দিকে চলে গেছিল। তাড়াতাড়ি পা চালালো সে। আজ যে ওর হাউস বিল্ডিং লোনের রিপেমেন্ট করার শেষ দিন সেটা কাজের চাপে মনেই ছিল না। হঠাৎ মোবাইলে একটা মেসেজ দেখেই ওর মাথা খারাপ। ফ্যাক্টরিতে ওদের সেকশনে নেট কাজ করে না বলে স্মার্টফোন আনে না। ব্যাঙ্কের ব্র্যাঞ্চ অনেক দূরে। অন্য ব্র্যাঞ্চ থেকে যে টাকা দেবে সে উপায়ও নেই, এটিএম কার্ড আনে নি। কোনো সাইবার কাফেতে বসে নেট ব্যাংকিং করার ভরসা হয় না ওর, যদি কোনোভাবে পাসওয়ার্ড ফাঁস হয়ে যায়! একমাত্র উপায় বাড়ী ফিরে নেটব্যাংকিং। আরেকটু জোরে পা চালালো সে।
(চলবে)
loading...
loading...
সুজন এর অণুলিখন প্রথম খণ্ড পড়লাম। নিয়মিত চললে পাঠকপ্রিয়তা নিশ্চয়ই পাবে।
loading...
ভালোই লাগছে প্রিয় লেখক! চলুক – দেখাযাক ওটা কিসের ছায়া

loading...
* অনুগল্প চলুক, আমরাও সাথে আছি…
loading...