আশফাকুল আনসারী আপদমস্তক একজন সাহিত্যিক ছিলেন। ভীষণ প্রতিভাবান- সাহিত্যের সকল শাখায় অনায়াসে বিচরণ করতেন। বন্ধুদের উতসাহ আর নিজেকে বিখ্যাত করার লোভে এক যুগ আগে নিজের প্রথম বই প্রকাশ করেছিলেন। প্রথম মুদ্রণে এক হাজার কপি ছেপেছিলেন। বইমেলায় সর্বসাকুল্যে ২১ কপি বিক্রি করতে পেরেছিলেন- তার প্রেমিকা কিনেছিল বিশ কপি আর এককপি কিনেছিলেন নিজে। এই বইয়ের দ্বিতীয় মুদ্রণ হয় নাই, তিনি আর কোন বই প্রকাশ করেন নাই। পরবর্তী পাঁচ বছর ধরে বাকী বইগুলো কেজি দরে বিক্রি করেছিলেন।
আশফাকুল আনসারী এখন আর লিখেন না। তবু একুশে বইমেলা এলে ভীষণ উতফুল্ল থাকেন। নতুন লেখকদের কয়টা বই বের হচ্ছে- খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সে সব সংবাদ রাখেন। বইমেলায় গিয়ে নতুন লেখকদের বই নেড়েচেড়ে দেখেন- কিন্তু কিনেন না। নতুন লেখকদের ঠিকানা সংগ্রহ করে যত্নে রাখেন। তিনি জানেন মেলার প্রাথমিক উচ্ছাস কেটে গেলে লেখক নিজের বইয়ের বাজারিমূল্য অনুধাবন করতে পারে। তিনি শুধু লেখকের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেন- অবশিষ্ট সব বই নগদমূল্যে কিনে নেন।
প্রতিভাবান সাহিত্যিক আশফাকুল আনসারী নিজের বই কেজি দরে বিক্রি করতে করতে আপদমস্তক পুরানো কাগজ কেনার ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছেন। নতুন লেখকদের দুঃখ তার মত আর ক’জন বুঝতে পারবে! তিনি নতুন লেখকদের অবিক্রিত বই উচিত দামে কেজি দরে কিনে নেন।
প্রতিটি বইমেলা কতজন লেখককে পুরানো কাগজ কেনার ব্যবসায়ীতে পরিণত করে বাংলা একাডেমী সে হিসাব রাখেনা, সে হিসাব রাখেনা বাংলা সাহিত্য।
loading...
loading...
এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।
loading...
অন্যরকম লেখা
loading...
loading...
দারুন বিবর্তন।
loading...