৪ঠা জুলাই, আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস

স্কুল জীবনে বইয়ের পাতায় স্ট্যাচু অব লিবার্টির ছবি দেখেছিলাম। কখনও ভাবিনি কোন একদিন স্ট্যাচু অব লিবার্টির সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারবো। ২০০১ সালে যেদিন আমেরিকার মাটিতে পা রাখলাম, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমান জে এফ কে বিমানবন্দরের মাথার উপর চক্কর খাচ্ছিলো, দেশ ছেড়ে এসেছি, কান্নাকাটিতে দুই চোখের পাতা ভারী, দুই দিনের প্লেন জার্নিতে দেহ অবসন্ন, সব ভুলে মোটা কাঁচের জানালায় মাথা রেখে খুঁজছিলাম স্ট্যাচু অব লিবার্টি।

বাংলাদেশের মেয়ে আমি, মহান মুক্তিযুদ্ধ আমার অহঙ্কার, পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকের সামরিক শাসনের শৃঙ্খল ভেঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। রক্তে আমার মুক্তির আনন্দ, পরাধীনতার শিকল ভাঙ্গার গান, আমি তো মুক্তির মশালধারী মূর্তিকে দেখতেই চাইবো। স্বদেশের জন্য কান্না, জার্নির ক্লান্তি ছাপিয়ে সেদিন স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখার তীব্র আকুলতা জেগেছিল, উঁচু আকাশ থেকে দিগন্ত বিস্তৃত নিউইয়র্কের মাটিতে মুক্তির মশালধারী নারীকে ঠিকই দেখতে পেয়েছিলাম।

মুক্তির আনন্দ কে না চায়, স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচতে চায়। জগতের প্রতিটি প্রাণী তার নিজের মত করে বাঁচতে চায়, পরাধীনতার শৃঙ্খলে কেউ বাঁধা পড়তে চায়না। ভারতবাসী বৃটিশ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গেছিল, বাঙ্গালী ভেঙ্গেছিল পশ্চিম পাকিস্তানীদের শৃঙ্খল। বৃটিশ সাম্রাজ্যের অধীনস্থ ছিল অনেক দেশ, অনেক জাতি। সকলেই শৃঙ্খল ভেঙ্গে বেরিয়ে এসেছে। বৃটিশ শৃঙ্খল আমেরিকানরাও ভেঙ্গেছিল, শৃঙ্খল ভেঙ্গে গ্রেট বৃটেনের শাসনের কবল থেকে মুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন জাতি, ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে ‘ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা’র জন্ম হয়েছিল, ১৭৭৬ সালের ৪ঠা জুলাই তারিখে।

পেছন ফিরে দেখাঃ

গ্রেট বৃটেন নিজেদের আধিপত্য এবং সাম্রাজ্য বিস্তারের লক্ষ্য নিয়ে ১৬০৭ সাল থেকে ১৬৩২ সালের মধ্যে উত্তর আমেরিকা’র ইস্ট কোস্ট অঞ্চলে তেরটি কলোনি স্থাপন করে। সর্বপ্রথম ব্রিটিশ কলোনি স্থাপিত হয় ভার্জিনিয়ায়, এবং সর্বশেষ জর্জিয়ায়। বাকী এগারোটি কলোনি হচ্ছে, ম্যাসাচুসেটস, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, মেরিল্যান্ড, কানেকটিকাট, রোড আইল্যান্ড, ডেলাওয়ার, সাউথ ক্যারোলাইনা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া। উল্লিখিত কলোনিগুলোর রাজনৈতিক, সাংবিধানিক এবং আইন ব্যবস্থায় যথেষ্ট মিল ছিল।

আমেরিকায় ফ্রেঞ্চ কলোনিও ছিল, গ্রেট বৃটেনের সাথে ফ্রান্সের শত্রুতাও ছিল। তাই আমেরিকা থেকে ফ্রান্সের আধিপত্য হটিয়ে দিতে বৃটিশ সাম্রাজ্যের অধীনস্থ কলোনিগুলোকে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে অনেকবার যুদ্ধ করতে হয়েছে। ১৭৬৩ সালে ফ্রান্স আধিপত্য গুটিয়ে নিয়ে আমেরিকা ছাড়তে বাধ্য হয়।

উত্তর আমেরিকায় স্থাপিত ব্রিটিশ কলোনির সাথে ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের বাহ্যিক যোগাযোগ ছিল ১৭৫০ সাল পর্যন্ত। যদিও ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তাদের কোন প্রতিনিধিত্ব ছিলনা, কোনরকম অংশগ্রহণের সুযোগ ছিলনা, কিন্তু তাদেরকে নিয়মিত ট্যাক্স দিতে হতো। ধীরে ধীরে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, এক কলোনির সাথে আরেক কলোনির যোগাযোগ এবং সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন এবং আরও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের উৎসাহ এবং প্রচারণায় ‘আমেরিকান’ হিসেবে নিজেদের আইডেনটিটি সম্পর্কে জনগণ সচেতন হতে শুরু করে। বৃটিশ পার্লামেন্টে অংশগ্রহণ ব্যতিরেকে ট্যাক্স না দেয়ার দাবীতে সকলের মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠে। ব্রিটিশ কলোনিস্ট নয়, আমেরিকান হিসেবে নিজেদের আলাদা স্বীকৃতির দাবীতে ১৭৭৪ সালে গঠিত হয় ‘কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস”, যা ১৭৭৬ সালে গ্রেট বৃটেনের অধীনস্থতা থেকে বেরিয়ে এসে আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণা করে, আলাদা আলাদা রাজ্য সরকার গঠণ করে, সকল রাজ্যকে সংযুক্ত করে আমেরিকার নতুন নামকরণ হয় ‘ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা’।

ভারতবর্ষ যেমনি ইংরেজ শাসকদের অধীনে ছিল দুইশত বছর, পৃথিবীর আরও অন্যান্য দেশের মত আমেরিকার ১৩টি রাজ্য গ্রেট ব্রিটেনের অধীনস্থ কলোনি হিসেবে পরাধীন ছিল। কেউ পরাধীনতার শৃঙ্খলে বাধা থাকতে চায়না, পরাধীনতার গ্লানি থেকেই প্রতিবাদী চেতনা জাগ্রত হয়। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আমেরিকানদের প্রতিনিধিত্ব ছিলনা, কিন্তু প্রতিনিধিত্ব ছাড়াই আমেরিকানদের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করা হতো। বৃটিশ পার্লামেন্টে আমেরিকানদের প্রতিনিধিত্ব ছাড়াই বাধ্যতামূলক ট্যাক্স প্রদানকে কেন্দ্র করে বৃটিশরাজের বিরুদ্ধে তের কলোনিতেই অসন্তোষ দানা বাঁধতে থাকে। তের কলোনিস্টসদের এই অসন্তোষ যেন বিদ্রোহে রূপান্তরিত না হতে পারে, সেজন্য ব্রিটিশরাজ সেনাবাহিনী পাঠিয়ে দেয় আমেরিকানদের বিদ্রোহকে দমন করতে। কিন্তু মিলিটারী দিয়ে সেদিন কলোনিস্টদের বিপ্লব দমন করা যায়নি।

আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল, প্রতিবাদ থেকে বিপ্লব, যা ইংরেজীতে বলে ‘রেভুলিউশন। আমেরিকান রেভুলিউশন যখন তুঙ্গে, তখন ১৭৭৬ সালের জুন মাসে ভার্জিনিয়ার কংগ্রেসম্যান রিচার্ড হেনরী লী কংগ্রেসে ‘রেজুলিউশন অব ইনডিপেন্ডেনস’ তৈরীর প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

১৭৭৬ সালের ১১ই জুন ফিলাডেলফিয়াতে কন্টিনেন্টাল কংগ্রেসের অধিবেশন হয় এবং সর্বসম্মতিক্রমে একটি কমিটি গঠিত্ হয়, কমিটি গঠনের প্রথম উদ্দেশ্য ছিল গ্রেট বৃটেনের অধীনস্থতা থেকে বেরিয়ে আসার দিকনির্দেশনা সম্বলিত একটি খসড়া দলিল তৈরী করা। কমিটিতে ছিলেন থমাস জেফারসন, বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন, জন অ্যাডামস, রজার শেরমান এবং রবার্ট আর লিভিংস্টোন। থমাস জেফারসন ছিলেন শক্তিমান লেখক, স্বাধীনতা দলিলের খসড়াটি উনিই তৈরী করেন, জেফারসন রচিত দলিলে ৮৬ স্থানে পরিবর্তন করার পর সেকেন্ড কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস ২রা জুলাই, ১৭৭৬ ভোটের মাধ্যমে রেজুলিউশন অব ইন্ডিপেনডেনস বিল পাস করেন, এবং ৪ঠা জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়।

১৭৭৭ সালে আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের প্রথম বর্ষ পূর্তিতে তেরটি ফাঁকা গুলী ছুঁড়া হয়েছিল, সকালে একবার, সন্ধ্যায় আরেকবার।
১৭৯১ সালে ৪ঠা জুলাই ইনডিপেনডেন্স ডে হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
১৮৭০ সালে ইউ এস কংগ্রেস ফেডারেল এমপ্লয়ীদের জন্য অবৈতনিক ছুটির দিন ঘোষণ আকরা হয়।
১৯৩৮ সালে কংগ্রেসের অধিবেশনে ইনডিপেন্ডেন্স ডে মজুরীসহ ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়।

গ্রেট বৃটেনের শাসনের শৃঙ্খল ভেঙ্গে ইউনাইটেড স্টেট অফ আমেরিকার জন্ম হয় ১৭৭৬ সালের ৪ঠা জুলাই, ৬ই ডিসেম্বার ১৮৬৫ তারিখে আমেরিকা থেকে ক্রীতদাস প্রথা (অফিসিয়ালি) বিলুপ্ত হয়। ক্রীতদাস প্রথা বিলুপ্তির সাথে সাথে আমেরিকার আকাশে বাতাসে গীত হয় শিকল ভাঙ্গার গান, মুক্তির গান! আমেরিকান জনগণ সত্যিকার অর্থে স্বাধীন হয়। ফ্রান্সের জনগণের তরফ থেকে ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকার জনগণকে উপহার দেয়া হয় ‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’, দ্য ‘সিম্বল অফ ফ্রিডম এন্ড ডেমোক্রেসী’।

১৮৮৪ সালের জুলাই মাসে ফ্রান্সে স্ট্যাচু অফ লিবার্টির সকল কাজ সম্পন্ন হয়। ১৮৮৫ সালের জুন মাসে মূর্তিটি নিউইয়র্কে এসে পৌঁছায়, ১৮৮৬ সালের ২৮শে অক্টোবার প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’’র পর্দা উন্মোচন করেন।

ফোর্থ অফ জুলাই
আজ ৪ঠা জুলাই, আমেরিকার ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে, মানে আমেরিকার জাতীয় দিবস, দিনটি আমেরিকান জনগণের কাছে ফোর্থ জুলাই অথবা জুলাই ফোর্থ হিসেবে অনেক বেশী উচ্চারিত হয়ে থাকে।

১৭৭৬ সালের ৪ঠা জুলাই গ্রেট বৃটেনের আধিপত্য থেকে মুক্ত হয়ে ‘ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা’ নামে সম্পূর্ণ নতুনভাবে আবির্ভূত হয়েছিল। ইনডিপেনডেনস ডে আমেরিকান জনগণ যথাযোগ্য মর্যাদা এবং আনন্দ উৎসাহ নিয়ে পালন করে। দিনটি সরকারী ছুটির দিন। এই দিনে প্যারেড হয়, মেলা, বেসবল, কার্নিভ্যাল, পিকনিক, কনসার্ট, ফ্যামিলি রিইউনিয়ন তোঁ হয়ই, সারাদিন শেষে সাঁঝের বেলা থেকে শুরু হয় বাজি পোড়ানো, এই সর্বশেষ আতশ বাজির উৎসব দেখার জন্য আমেরিকানরা ঘর ছেড়ে খোলা মাঠে এসে জড়ো হয়। পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধব, চেনা অচেনার মেলায় বসে সকলে আকাশের দিকে চোখ মেলে দেখে যায়, আকাশে উৎক্ষেপিত আতশ বাজির রঙবেরঙের মেলা।

আজ আমেরিকার আকাশে বাতাসে আনন্দ, সকলের বাড়ির আঙিনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলিত, খাওয়া-দাওয়া হবে, কনসার্ট হবে, খেলা হবে, সবশেষে সন্ধ্যায় পরে আকাশে আতশবাজির মেলা চলবে।

কাকতালীয়ঃ
আমেরিকার স্বাধীনতার দলিলে যে পাঁচজন স্বাক্ষর করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে জন অ্যাডামস এবং থমাস জেফারসন (উভয়েই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন) ৪ঠা জুলাই ১৮২৬, আমেরিকার পঞ্চাশতম স্বাধীনতা দিবসে মৃত্যুবরণ করেন। স্বাধীনতা দলিলে স্বাক্ষর করেননি কিন্তু ফাউন্ডিং ফাদার জেমস মনরো (উনিও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন) মারা যান ১৮৩১ সালের ৪ঠা জুলাই। আমেরিকার ৩০তম প্রেসিডেন্ট কেলভিন কুলিজ অবশ্য জন্মগ্রহণ করেছেন ৪ঠা জুলাই, ১৮৭২।

ফিরে আসি স্ট্যাচু পফ লিবার্টি’র সেই নারী মূর্তির প্রসঙ্গে।
রোমান দেবী লিবার্তা’র অনুকরণে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, যার এক হাতে আলোকবর্তিকা, অন্যহাতে আইনের বই। বইয়ের কভারে খোদাই করা আছে ৪ঠা জুলাই, ১৭৭৬। স্ট্যাচুর পায়ে ছেঁড়া শেকল, যার মানে ‘মুক্তি, এবং স্বাধীনতা’।

কিছু তথ্যঃ
স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’র ডিজাইন করেন, ফ্রেঞ্চ স্কাল্পটর ফ্রেডেরিক অগাস্টি বার্থলডি।
নির্মাণে ছিলেনঃ ফ্রেডেরিক অগাস্টে, গুস্তভ আইফেল, ইগুইন ভায়োলেট, রিচার্ড মরিস হান্ট।
নির্মাণ শুরুঃ সেপ্টেম্বর ১৮৭৫
নির্মাণ শেষঃ অক্টোবার ১৮৮৬
মূর্তি তৈরীতে ব্যবহৃত হয়ঃ কপার, রট আয়রণ, স্টিল
উচ্চতাঃ ৩০৫ ফিট
স্থাপিতঃ লিবার্টি আইল্যান্ড, নিউইয়র্ক।

২০১৫ সালের জুন মাসে গিয়েছিলাম নিউইয়র্ক, বিশাল লঞ্চে চড়ে সরাসরি চলে গেছিলাম লিবার্টি আইল্যান্ড, স্ট্যাচু অফ লিবার্টকে খুব কাছে থেকে দেখতে চেয়েছি। লঞ্চ যত কাছে যায়, মূর্তি ততই বড় দেখায়। লঞ্চ থেকে আইল্যান্ডে নেমে মূর্তির দিকে তাকালাম, মূর্তির বিশালত্বে মুগ্ধ হলাম। স্বাধীনতার মশাল হাতে যিনি দাঁড়াবেন, তিনি অবশ্যই আকাশ ছোঁয়া উচ্চতায় পৌঁছাবেন, নাহলে স্বাধীনতার বিশালত্ব থাকে কি করে! আমার অনুভূতি!

বাংলাদেশে ভাড়া বাড়িতে কেটেছে কাল, তাই জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উড়াতে পারিনি কখনও। এই নিয়ে আমার মনে চাপা দুঃখ ছিল। বাংলাদেশে অবশ্য ‘৭৫ এর পর প্রতি বাড়িতে জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উড্ডয়নের রেওয়াজ আর নেই। আমেরিকায় প্রতিটি জাতীয় দিবসে প্রতিটি বাড়িতে জাতীয় পতাকা উড্ডয়ন করা হয়।

ধারের টাকায় কিনলেও আমেরিকাতেই নিজেদের নামে জীবনের প্রথম বাড়ি কিনেছি। জাতীয় দিবসে পতাকা উড্ডয়ন করিনি এতকাল, কেমন যেন মনে খুঁত খুঁত করতো। এরপর খুঁতখুঁতুনি চলে গেছে, আমেরিকা আমাদের নাগরিকত্ব দিয়েছে, নিশ্চিন্ত নিরাপদ নিরুপদ্রব জীবন, স্বাধীনভাবে চলার নিশ্চয়তা দিয়েছে। তবে কেন নিজেকে আমেরিকান ভাবতে এত খুঁতখুঁতুনি! গত তিন বছর যাবৎ আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসসহ জাতীয় দিবসগুলোতে নিজ বাড়িতে আমেরিকান পতাকা উড়াই।

পতাকা হচ্ছে একটি দেশের পরিচয়। কোন দেশের প্রতি নানা কারণে বৈরী মনোভাব থাকতে পারে, তাই বলে কোন দেশের পতাকাকে অসম্মান করতে নেই। যার যার দেশের পতাকা তার তার কাছে সাত রাজার ধন।

ফেসবুকে অনেকেই বিভিন্ন সময় ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের পতাকার ছবি দিয়ে অশ্লীল, কুরুচীপূর্ণ মন্তব্য লিখে ট্রল করে। এটা অন্যায়, তেমন ছবি দেখলেই আমার মন খারাপ হয়।

আমি কখনও কোন দেশের জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করিনি, এমনকি পাকিস্তানের পতাকা দেখলেও অসম্মান করার কথা মনে আসেনা। ঈশ্বর পৃথিবীর প্রতিটি দেশের মানুষের জীবন শান্তিময় করুন। আজ ৪ঠা জুলাই, আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস, আমেরিকান নাগরিক হিসেবে সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা!

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৬ টি মন্তব্য (লেখকের ৩টি) | ৩ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ০৫-০৭-২০১৮ | ৯:৪২ |

    আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস, আমেরিকান নাগরিক হিসেবে আপনার প্রতিও আমাদের শুভেচ্ছা। এতিহ্য স্মৃতি ভালোবাসা সর্বজুড়ে থাক হৃদয়ে আমাদের বাংলাদেশ। শুভদিন।

    GD Star Rating
    loading...
    • রীতা রায় মিঠু : ১২-০৭-২০১৮ | ৮:৫৪ |

      স্মৃতি ভালোবাসা সর্বজুড়ে থাক হৃদয়ে আমাদের বাংলাদেশ। ধন্যবাদ আজাদ ভাই।

      GD Star Rating
      loading...
  2. রিয়া রিয়া : ০৫-০৭-২০১৮ | ১৭:২৬ |

    আমরা ভারতবাসী বৃটিশ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে বেড়িয়ে আসতে পেরেছি। আমাদের অখণ্ডতা আজও ধরে রাখতে পেরেছি। একজন ভারতীয় হিসেবে আমি গর্বিত। শৃঙ্খলমুক্ত জাতির একজন নাগরিক হিশেবে আমিও সকল জাত ধর্ম সার্বভৌমত্বের প্রতি সমান সম্মান রাখি। সকল আমেরিকান সহ আপনাকেয়ো জানাই শুভেচ্ছা দিদিভাই।

    GD Star Rating
    loading...
    • রীতা রায় মিঠু : ১২-০৭-২০১৮ | ৮:৫৫ |

      আমিও সকল জাত ধর্ম সার্বভৌমত্বের প্রতি সমান সম্মান রাখি। ধন্যবাদ রিয়া।

      GD Star Rating
      loading...
  3. সাইদুর রহমান১ : ০৬-০৭-২০১৮ | ৯:০৬ |

    তথ্যবহুল লেখায় আপনাকে স্বাগতম প্রিয় লেখিকা রীতা রায় মিঠু

    GD Star Rating
    loading...
    • রীতা রায় মিঠু : ১২-০৭-২০১৮ | ৮:৫৬ |

      ধন্যবাদ সাইদুর রহমান ভাই।

      GD Star Rating
      loading...