অত:পর আমার সমস্ত দরবেশি মাটি হলো। হিমালয় নাম চুলোয় গেলো। ওরা কেউ থামলো না। না আশ্বিনা ঝড়। না বর পক্ষের আগমন। আর না কনে পক্ষের জোয়ার জল। তুমুল বৃষ্টি আর দমকা হাওয়া যেনো লাঠালাঠির উষ্ণতা আরো বহুরুপী মাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছে। বাতাসের সাঁ সাঁ শব্দ গাছেদের পাতায় লেগে নতুন সুরের মুর্চছনা সৃষ্টি করেছে। সুরের এই ইন্দ্রজালের সাথে কাদাজলে লুটোপুটি খেয়ে লাটি খেলতে পারা এবং খেলা দেখতে পারা সবার ললাটে জোটে না। এখানে যেমন থ্রিল আছে, তেমনি আছে রোমাঞ্চ। বৃষ্টির সাথে সাথে আকাশ- বাতাস ওরাও চেটেপুটে খেয়ে নিচ্ছে স্বাদ। ভোগ আর উপভোগের এমন সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে কোন হতচ্ছাড়া?
এই খেলায় আমরা তিনজন মাত্র পরাজিত জন। সকাল, নীলু আর আমি অধম। একটা আধা চালা ঘরের নিচে আধাআধি করে দাঁড়িয়ে আছি। আমার অদুরেই সকাল। তার মাথার উপরে আকাশ-ই একমাত্র ছাদ। ভেন্না পাতাও নেই। এই আক্রোশ মুলক বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে ছেলেটা সাংঘাতিক রকমম ঘামছে। সকল মানুষের সহ্যের একটা সীমা আছে। আমারও। চোখের ইশারায় সকালকে কাছে ডাকলাম। ও কিছু অপ্রস্তুত হলো। তবে থতমত খায়নি। আমি কোনো ভণিতা না করেই জিজ্ঞেস করলাম–
তুমি কি নীলুকে —-+- এই পর্যন্ত বলতেই সে উত্তর দিলো, জী আমি নীলুকে ভালোবাসি।
মনে মনে আমি সকালের আই কিউর প্রশংসা না করে পারলাম না। আবার বললাম, নীলু কি সেটা জানে?
জী না। আমি ওকে সরাসরি কোনোদিন বলিনি।
এ আবার কেমন ভালোবাসা?
কেনো কবিতার মতো। আমি তো কবিতাকেও কোনোদিন বলিনি তোমাকে ভালোবাসি। তবুও তো আমি তাকে ভালোবাসি। সব ভালোবাসা বলতে হয় না। হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হয়। হৃদয়ে ধারণ করতে হয়।
আমি আরেকবার সকালকে মনে মনে সালাম দিলাম। পরিষ্কার আকাশের মতো তার স্পষ্টভাষিতা আমাকে বিমুগ্ধ করলো। তবুও আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, নীলু কি তোমাকে….?
জী আমার ধারণা নীলুও আমাকে ভালোবাাসে। যে মাটিতে আমাদের শরীর তৈরি সেই মাটির মতোই ভালোবাসে। সে কথা ও আমাকে কয়েকদিন বলতে চেয়েছে। কিন্তু বুক ভেংগে মুখে আনতে পারিনি। তবে আমি ঠিক ই বুঝে নিয়েছি। যেমনি করে বাতাসকে আমরা না দেখে বিশ্বাস করি তেমনি।
আমি কী বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। আমার মাথায় সমস্ত আকাশ। তবুও ভালো পায়ের তলার মাটি সরে যায়নি দেখে নিজের কাছেই খুব অবাক লাগছে। আসলে অন্ধকার দিয়ে অন্ধকার চেনা যায় না। অন্ধকার চিনতে হয় আলো দিয়ে। সকাল তেমনি এক আলোর নাম। রাত্রির নপুংসক অন্ধকারকে আলোকিত করার জন্য-ই সকালদের জন্ম।।
আমার ভাবান্তর টের পেলাম। সকালকে আর কিছু না বলে দস্যু বৃষ্টির দিকে অনিমেষ তাকিয়ে রইলাম। (চ ল বে)
loading...
loading...
চমৎকার এক ধারাবাহিকের সাথে থাকতে পেরে নিজের কাছেই ভালো লাগছে।
সকাল চরিত্রটির প্রতি মায়া জন্মালো। অভিনন্দন প্রিয় কবি।
গদ্য এই লিখনের সাথে আছি। ধন্যবাদ।
loading...
অফুরান ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জামান ভাই।।
loading...