আমি যখন এফ রহমান হলে থাকতাম রাতের বেলা পালে পালে মহিষ নীলক্ষেত দিয়ে যেতে দেখতাম। একপাল মহিষের সাথে দু একটা গরুও থাকত। রাতের বেলা পালে পালে মহিষ দেখলেও সকাল বেলা সারা ঢাকা শহরের কোথাও মহিষের মাংস বিক্রি হয় শোনা যেত না। সব জায়গায় গরুর গোশ্ত বিক্রি হয়। এই মহিষগুলোর জন্য আমার দুঃখও হত। বেচারারা নিজ পরিচয়ে মরতেও পারে না। আজীবন মহিষ থেকে মরার পরে হয়ে যাচ্ছে গরু। বেওয়ারিশ লাশের মত অবস্থা। হবে না কেন? স্বাদের বিচারে গরুর গোশতের উপর কোন গোস্ত নাই। বিক্রেতারা মহিষের গোস্তকে গরুর গোস্ত বলে চালিয়ে দেয়। এছাড়াও আরো নানা ধরনের ঠকবাজী তারা করে। সেইসব ঠগবাজী থেকে বাঁচার জন্য ইন্টারনেট ঘেঁটে-টেঁটে আপনাদের জন্য নানা টিপস হাজির করলাম। আমার ধারনা এই টিপস গুলো মেনে চললে মাংস কেনার পর বাসায় এসে ঝাড়ি খাওয়া থেকে বাঁচবেন।
– গোশত কসাইকে দিয়ে টুকরো করাবেন না। আস্ত টুকরা কিনবেন এবং বাসায় এসে নিজেরাই টুকরো করে নেবেন। কারন গোশত বিক্রির মূল ঘোটঝালাইটা হয় টুকরো করার সময়ই। উল্লেখ্য যে, গরুর গোশত টুকরো করা তেমন জটিল কিছু নয়। কোরবানীর ঈদের সময় আমরা অনেকেই তা করে থাকি। আস্ত গোশত কিনে ঘরে ফেরার পর যদি মা কিংবা বৌ আপনাকেই কোপাতে চায় তবে দেরী না করে ইয়া আলী বলে নিজেই বটি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে পারেন – অবশ্যই গরুর গোশের উপর।
– যে স্থানের গোশত পছন্দ বলবেন সে স্থানের এক তাল গোশত কেটে দিতে। পরে বাসায় এনে নিজে টুকরো করবেন। (শুধুমাত্র হাড় আলাদা করে কুপিয়ে দিতে বলবেন)
– হাড় কুপিয়ে দিলে তারপর বলবেন ওজন করতে, তার আগে নয়। ভুলেও আগে বলবেন না যে গোশ বাসায় টুকরো করবেন। তাহলে তারা ঘটনা বুঝে ফেলে অন্য পন্থায় দুই নম্বরী শুরু করবে।
– যদি আপনার দরকার হয় ৫ কেজি, আপনি বলবেন ৩ কেজি। বেশী বিক্রি করার জন্য তারা ইচ্ছে করে বেশী করে কাটে। ৩ কেজি কাটতে বললে তারা ঠিক ৫ কেজিই কাটবে – যা আপনার প্রকৃত প্রয়োজন।
– গরুর গোশত বলে মহিষের গোশত দেয়া কসাইদের জন্মগত অভ্যাস। মনে রাখবেন, গরুর গোশের রোয়াগুলো চিকন হয় আর মহিষের গোশের রোয়া হয় মোটা মোটা।
– গরুর গোশত একটু লালচে ধরণের আর মহিষের গোশত কালচে।
– গরু আর মহিষের গোশত চেনার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো চর্বি। গরুর চর্বির রং হয় ঘোলাটে হলুদ আর মহিষের চর্বির রং হয় সাদা।
– নিয়মিত নির্দিষ্ট কসাইয়ের কাছ থেকে গোশত নিলে বাধা কাষ্টমার হারাবার ভয়ে তারা পারোতপক্ষে ঠকবাজী করার চেষ্টা কম করে।
– ভালভাবে চিনে কিনতে পারলে সুপার সপে বিক্রি হওয়া গোশতের চেয়ে কশাইয়ের গোশত অপেক্ষাকৃত ফ্রেশ ও ভাল মানের হয় (ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা)
– সকাল ৭-৮ টার মধ্যে গোশত কেনাটাই সবচেয়ে ভাল। তাতে গোশত ফ্রেশ থাকে আর ভাল অংশগুলোও সহজপ্রাপ্য হয়।
সবচেয়ে বড় টিপস হলো – নিজের সবোর্চ্চ বুদ্ধি খাটিয়ে ও পূর্ব পরিকল্পনা নিয়ে যে কোন শপিং করলে তার মান অবশ্যই উন্নততর হবে।
loading...
loading...
টিপস শেয়ার করে অন্ধজনে দিলেন আলো !!
খোলা বা বদ্ধ বাজার থেকে মাংশ কেনার সময় জামাইয়ের মতো এখনও আমি সিমেন্টের বস্তার ব্যাগ ধরে আঁটোসাটো হয়ে দোকানীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। গলা থেকে কমাণ্ডিং ভয়েসটা উধাও হয়ে যায়। মনে হয় কিনতে নয়; বিনে পয়সায় দয়ার অংশ থেকে নিজেরটা নিতে এসেছি। যা দেয় বাসায় আনি। ভাগ্যে কখনও প্রশংসা কখনও তিরস্কার। অতি অতি জোটার কারণে আমি ভাগ্যের বিধিলিপি মেনে নিয়েছি।
আমাদের মফস্বলের দোকানিরা মাত্র ২ কেজি মাংশের কথা বললে মাংশ গুলোকে এমন ভাবে আলতো করে নাড়াচাড়া করে আমাদের জন্য বেছে বেছে বের করেন যে, মনে হয় ক্যানভাসে আঁকা কোন জলরঙা ছবির শেষ আঁচড়। আমি তাকিয়ে থেকে দেঁতো হাসি। ঠকানোর মহাকৌশল আমার ভালো লাগে। ও ঠকায় আমি ঠকি। আমরা ঠকি।
loading...
আপনি তো বেশ গোশ্ত কেনার অভ্যাস আছে দেখছি। আমার নেই। আমি ছোটবেলা থেকেই কাজটি অন্যের উপর দিয়ে চালিয়ে দিয়ে আসছি।
বলতে পারেন, আপনি আচরি ধর্ম অপরে শেখাও। কিন্তু জানেন কি জামানা পাল্টাইছে। এখন সবাই কন্সাল্টেন্ট। আমিও ইন্টারনেট ঘাঁইটা একটু চালাকি করলাম!
loading...
loading...
ভালো লাগল।
loading...
অনেক ধন্যবাদ স্যার। আশাকরি টিপসগুলো উপকারে আসবে!
loading...
বাহ্, চমৎকার ভাবনা তো
loading...
স্যার, ভাবনা নয়, ইন্টারনেট থেকে, কপি পেস্ট মারছি। আর তার উপরে একটু মেকাআপ কইরা নিছি।
loading...
গরুর গোস্ত কিনে আমি আজ পর্যন্ত কখনো ঠকিনি । কিন্তু এই কাজটা আমার অনেক ঝামেলার মনে হয়। কসাইয়ের হাত সাফাই এর দিকে কড়া নজর রাখা খুবই কঠিন। সব ক্ষেত্রে সম্ভবও না। ব্যতিক্রম পোস্ট ও মূল্যবান তথ্য শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ !
loading...
আর আমি কিনতেই যাই না। অন্যের উপর দিয়া চালায়া দিই।
একটু মজায়া নিলাম আর কি!
loading...
মহিষ বেচারারা নিজ পরিচয়ে মরতেও পারে না। আজীবন মহিষ থেকে মরার পরে হয়ে যাচ্ছে গরু! এই মহিষদের জন্য আমার খুব আপসোস হয়। ভাবছি মহিষ নিয়ে একটি গল্প লিখব।
গরুর গোশত যতবার কিনেছি ততবারই ঠকেছি। বাসায় যাওয়ার পর বউয়ের বকবকানি কত শুনেছি তা আজ আর নাই বা বললাম।
শুধু গরুর গোশত কেন আমাদের দেশের প্রতিটা পণ্যের মধ্যেই আমরা ভেজাল খুঁজে পাই। কেউ আমরা ভেজাল থেকে রেহায় পাই না।
loading...
এই টিপস খানি মনের মধ্যি গাঁথি নিলাম আনু আনোয়ার ভাই।
আমার দরকার যদি হয় ৫ কেজি, আমি বলবো ৩ কেজি। বেশী বিক্রি করার জন্য তারা ইচ্ছে করে বেশী করে কাটে। ৩ কেজি কাটতে বললে তারা ঠিক ৫ কেজিই কাটবে – যা আমার প্রকৃত প্রয়োজন। হৈ
loading...
গোশ্ত কেনার সহজ উপায় শিখে নিলাম। কলিগদের চালিয়ে দেবো।
loading...
মাংশ কিনতে না গেলেও বাসায় মাংশ এলে আমি কিন্তু ঠিকই বুঝতে পারি আনু ভাই।
loading...
ভেজেটেরিয়ান। যতটুকু যা ঐ ম্যাকডোনাল্ড কেএফসি ডমিনোস পর্যন্তই। নো বীফ।
loading...