চলে গেলে কেনো একা ফেলে

জীবনে তিনজন মানুষকে মাফ করতে নেই, যে ভালো না বেসে অভিনয় করে.. যে বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে বেইমানি করে.. যে বিশ্বাসের অমর্যাদা করে- উইকেন্ডে বাসায় ফেরার পথে চলন্ত বাসের ছাদে বসে কোনো কারণ ছাড়াই কথাগুলো হঠাত মনে পড়ে ফরহাদের। কোথায় যেন পড়েছিল। কোথায়.. সেটা মনে পড়ছে না এখন।

কথাগুলো মনের ভিতর ঘুরপাক খায়.. ফাঁকা রাস্তা.. দ্রুতগতির বাস সামনে আগায়। প্রচন্ড বাতাসের তোড়ে বাসের ছাদে চোখ বুজা অনুভবে ফরহাদ পিছনে যেতে থাকে। সময়ের সমান্তরালে।

হঠাৎ বৃষ্টি নামে। অসহায় ফরহাদ বাসের ছাদে বসে সময়ের স্মৃতিতে ধূসর অন্য এক ভিন্ন ছাদে পৌঁছে যায়। ঝাপসা পটভূমে.. এক সাদা-কালো দৃশ্যপটে বৃষ্টিভেজা ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ফরহাদ! অসহায় সেদিনও ছিল সে। রাস্তা জুড়ে নিঃসঙ্গতা.. দূর দূর পর্যন্ত কোথায়ও কেউ নেই। লেপ্টানো বসনে এক যুবতী দেহের বাঁকে বাঁকে প্রলোভনের ডালা সাজিয়ে ফিরে চলেছে!

পারুর সাথে কি ওটা-ই শেষ দেখা ছিল?

বাইরে উত্তাল প্রকৃতি। নিজের ভেতরেও কোথায় যেন দামামা বাজছে। কোথায়ও কিছু পুড়ছে। গন্ধ পায় ফরহাদ। মনটা জ্বলে ওঠে। সামনে বৃষ্টির তোড়ে দৃষ্টি চলে না। চোখ বুজে দেখার চেষ্টা করে।
দেখে কী?
অনুভব করে। অনেক কিছুই।

‘পারু একা-ই আমার সাথে ঐ তিনজনের কাজ করেছে। তারপরও…’
– তারপরও কি? ওকে ক্ষমা করতে চাইছ না তো?
‘তুমি ঠিক বুঝছ না আসলে। একবার কাউকে ভালোবাসলে, সেখানে ক্ষমা শব্দটা আসারই সুযোগ নেই। যাকে ভালোবাসবে, তার অতীত-ভবিষ্যতের সব কিছু ক্ষমা করেই না ভালোবাসার পথে পা বাড়াবে।’
– একটু আগে তবে মনে মনে কি ভাবলে?
‘উদ্ধৃতি বা কারো বাণী-ই কী সবকিছু? এক একজনের জীবন এক একরকম।’
– পারু কি কখনো জানবে তুমি এভাবে ভাবো?
‘নাহ! সে জানবে না.. অনুভব করবে.. কোনো একদিন!’

রাস্তার দুইপাশের গাছগুলি যেন ওদের ডানা নুইয়ে ফরহাদকে ছুঁয়ে দিতে চায়! দুরন্ত মাতাল হাওয়া পাতায় জমা বৃষ্টিকণা দিয়ে আলতো পরশে ওকে সিক্ত করতে চায়.. গাছের পাতা যেন পারুর বৃষ্টিভেজা চুল! ওর একটুকু পরশ ফরহাদের কোথায় যেন কাঁপন ধরিয়ে যায়।।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৮ টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ৭ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ০২-০৮-২০১৭ | ২২:৫৭ |

    আপনি পাঠকদের বড় গল্প বা উপন্যাস পড়ার অভ্যাসটাই বদলে দিতে শুরু করেছেন মি. মামুন। হাতের লিখা উপস্থাপনে জাদু থাকলে আমরা কেন বড় কিছু পড়তে যাবো !!

    শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন মি. অণু_গল্পকার। Smile

    GD Star Rating
    loading...
  2. আমির ইশতিয়াক : ০৩-০৮-২০১৭ | ৯:৩৬ |

    বড় গল্পের স্বাদই অন্যরকম। অণুগল্প পড়ে তৃপ্তি পাওয়া যায় না।https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

    GD Star Rating
    loading...
  3. মোকসেদুল ইসলাম : ০৩-০৮-২০১৭ | ১১:৪৪ |

    অণুগল্পের মজাই আলাদা। ভালো লাগল অনেক

    GD Star Rating
    loading...
  4. ফেনা : ০৩-০৮-২০১৯ | ১২:৩২ |

    অনু গল্পের বিষয়গুলি একটু ভিন্ন হয় যা পাঠকদের সহজেই টানে। 

    আপনার লেখায় শুভেচ্ছা। 

     

    GD Star Rating
    loading...
  5. সুমন আহমেদ : ০৩-০৮-২০১৯ | ২০:৩৫ |

    সুন্দর অণুগল্প আল মামুন ভাই। Smile

    GD Star Rating
    loading...
  6. সৌমিত্র চক্রবর্তী : ০৩-০৮-২০১৯ | ২০:৪৩ |

    আমার কাছে ভালো লেগেছে। শুভেচ্ছা মহ. আল মামুন ভাই। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

    GD Star Rating
    loading...
  7. মাহমুদুর রহমান : ০৮-০৮-২০১৯ | ০:০৭ |

    ভালোবাসা রহস্যময়! 

    GD Star Rating
    loading...
  8. মাহমুদুর রহমান : ০৮-০৮-২০১৯ | ০:১০ |

    ভালোবাসা রহস্যময়

    GD Star Rating
    loading...