একটু জ্ঞান … যারা হিংসা / ঈর্ষা করে তাদের জন্য ..
প্রশ্ন … ঈর্ষা আর হিংসার মধ্যে পার্থক্য কি? একটা মানুষের মধ্যে কতটুকু পর্যন্ত হিংসা সহনীয় মাত্রা বলে মেনে নেয়া সম্ভব? কারো মধ্যে এর প্রভাব মাত্রাতিরিক্ত মনে হলে তার জন্য কি ধরনের কাউন্সেলিং দরকার?
১. নিজের যা আছে তাকে রক্ষা করার চেষ্টা থেকেই ঈর্ষার জন্ম। নিজের যা নেই, অন্যের আছে তা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকেই হিংসা। কিছু হারানোর আশঙ্কায় অস্বাভাবিক এবং অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া ঈর্ষা। আর এই প্রতিক্রিয়া যখন অন্যের ক্ষতি করার ইচ্ছে তৈরী করে মনে তখন তা হলো ধ্বংসাত্মক ঈর্ষা বা হিংসা। মূলত হেরে যাওয়ার ভয়, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঈর্ষার আরেকটি কারণ। তবে মুখ্য হলো ব্যক্তিগত হিংসা। নিজেকে মহান ভাবার বোধ, যাকে বলা হয় অস্বাভাবিক অহংমন্যতা, এর থেকেও আবার তৈরি হয় কূপমণ্ডুতা। এর উৎস নিজেকে সর্বেসর্বা ভাবা। তবে দুটি সমমেধা যদি একে অন্যের পরিপূরক হয় তবে তা গঠনমূলক, সেখানে একে অন্যের প্রতি ঈর্ষা নেই। কিন্তু এর মধ্যে আমিত্ব বড় হয়ে উঠলেই ঈর্ষার উদয় হয়।
তবে সব ক্ষেত্রে তা হয় না, কারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় সমানে সমানে। তাছাড়া সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতার স্বাস্থ্যকর দিকও রয়েছে। যে মানুষ যথাযথ আত্মসমীক্ষা, আত্মবিশ্লেষণ করতে পারেন তাদের ঈর্ষা কম হয়। আকাঙ্ক্ষা না থাকলে ঈর্ষা আসে না। মনের প্রসারতা বাড়ালে ঈর্ষা কমে। সন্ন্যাসীর ঈর্ষা থাকে না। বিশেষণে কোনো একটা জায়গায় নিজেকে কম মনে হলে ঈর্ষা জন্মায়। ঈর্ষার পেছনে বুদ্ধি কাজ করে | মানসিক প্রতিবন্ধীদের তাই কোনো ঈর্ষা থাকে না।
শেক্সপীয়ার তার Othello tragedy তে বলেছিল – “O, beware, my lord, of jealousy; It is the green-eyed monster which doth mock The meat it feeds on.” ঈর্ষা থেকে চিন্তাকে মুক্ত করাটা নিজের দায়িত্ব। সুস্থ সমাজ, সমবণ্টন ও সুস্থ পরিবেশ প্রয়োজন। নিজের বোধ, বিবেচনা, বুদ্ধি দিয়ে বাস্তবের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে পারলে ঈর্ষাকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। বোধ ও বিবেচনা দিয়ে যে কোনো ঘটনার কার্যকারণ সম্পর্ক খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করলে মনে ঈর্ষার কোনো জায়গা হতে পারে না। কারো মধ্যে এর প্রভাব মাত্রাতিরিক্ত হলে একজন ভালো মনোচিকিৎসকের এর পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।
২. মূলত হেরে যাওয়ার ভয় থেকে ঈর্ষার জন্ম। আর পাঁচটা অনুভূতি বা আবেগের মতো ঈর্ষাও একটি মানসিক অবস্থা। আর হিংসা হলো অন্যের সৌভাগ্যের বিনাশ কামনা করা। ঈর্ষা সুযোগ সাপেক্ষ। হিংসার মধ্যে একটা আক্রমণাত্মক ভাব থাকে এবং হিংসা বোধবুদ্ধি আচ্ছন্ন করে ফেলে। ঈর্ষা মানুষকে প্রতিহিংসা পরায়ণ করে না, হিংসার ক্ষেত্রে তা সম্ভব। সম্পর্কের নৈকট্য ঈর্ষা নিয়ন্ত্রণ করে না। এটা নির্ভর করে ব্যক্তির নিজস্ব মানসিক গঠনের ওপর।
প্রতিটি ব্যক্তিসত্তা আলাদা, বিচ্ছিন্ন এক একটা দ্বীপের মতো, আলাদা চাহিদা যা সম্পর্ক-নিরপেক্ষ, সেখানে যখন আঘাত লাগে তখনই ঈর্ষার উদয় হয়। যে ব্যক্তি সব সময় নিজেকে অন্যের তুলনায় বড় দেখতে চান তার ঈর্ষা বেশি। ঈর্ষা সম্পর্কের ক্ষতি করে। ঈর্ষা যখন হিংসায় পরিনত হয়ে মারমুখি ভাব প্রকাশ করে তখন তা সীমার মাত্র অতিক্রম করে ফেলে। কারো মধ্যে এর প্রভাব মাত্রাতিরিক্ত হলে তার হিংসার বিষয়টি তাকে না বলে তার সাথে ভালো আচরণ করতে হবে। তাকে বুঝতে হবে এ বিশ্বের সবকিছু আমাদের পছন্দ আর চাহিদা মত হবে না, আর তা সম্ভবও নয়। যেমন যে বংশ-পরিচয়ে, বা যে পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছেন অথবা প্রকৃতি আপনাকে যে রকম চেহারায় তৈরী করে দিয়েছে তা কি আপনি বদলাতে পারবেন?
যেমন ধরুন প্রকৃতি আপনাকে যে চেহারাটি উপহার দিয়েছে, আপনি মেকআপ করে সাজাতে পারেন কিন্তু শত চেষ্টা করেও তার পরিবর্তন করতে পারবেন না। সুতরাং এই বিষয় নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগে আর অন্যের রূপে ঈর্ষান্বিত হয়ে কোন লাভ নেই। বরং উল্টো ভাবে নিজের দিকে তাকান, খুঁজে দেখুন, তাদের যেটা নেই, হয়তো সেটা আপনার আছে।
পুনঃ..কারো সাথে হিংসা না ঈর্ষা করবেন না।” ও যদি সুন্দর হয় তাহলে আমি দ্বিগুণ সুন্দর। প্রিয়তম বলেছে “। এ ধারণা মূলত অশিক্ষার লক্ষণ। অন্যকে কপি করে নয়, নিজের মৌলিকতায় নিজে বড় হবার চেষ্টা করুন। ভালো থাকবেন।
loading...
loading...
‘অন্যকে কপি করে নয়, নিজের মৌলিকতায় নিজে বড় হবার চেষ্টা করুন।
ভালো থাকবেন।’ ___ প্রকৃতই আন্তরিক এই পরামর্শ এবং অসাধারণ পোস্ট রিয়া।
loading...
অনেক ধন্যবাদ বন্ধু
loading...
ভালো লাগলো।
loading...
ধন্যবাদ আপনাকে
loading...
দারুণ একটা বিষয় জানতে পারলাম আর সেটা হলোঃ ” অন্যকে কপি করে নয়, নিজের মৌলিকতায় নিজে বড় হবার চেষ্টা করুন। ‘
ধন্যবাদ অাপনাকে।
loading...
ধন্যবাদ
loading...